‘হুমকি ও হামলায়’ ফেনীতে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধ

‘অব্যাহত হুমকি’ আর ‘ফের হামলার’ আশঙ্কায় ফেনীর সোনাগাজীতে নির্মাণাধীন একটি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নাজমুল হক শামীম ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2022, 03:21 PM
Updated : 3 April 2022, 03:21 PM

এই ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জিওটেক ইঞ্জিনিয়ারিং’ শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।

জিওটেক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নুর উদ্দিন বাদী হয়ে সোমবার [২৮ মার্চ] সোনাগাজী মডেল থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন।

৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ মেগাওয়াটের এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

নুর উদ্দিন অভিযোগে বলেন, সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বড়ধলী মৌজার আদর্শ গ্রামে ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি)।

“কাজ শুরু করার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এবং প্রকল্প এলাকায় গিয়ে কর্মরত শ্রমিকদের গালিগালাজ করেছে। একই সাথে প্রকাশ্যে বাজার দরের চেয়ে অতিরিক্ত দামে প্রকল্পের কাজে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহের জন্য চাপ দিয়ে আসছে দুর্বৃত্তরা।”

অভিযোগে আরও বলা হয়, তাদের কাছ থেকে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে প্রকল্পের মালামাল না কিনলে যেকোনো সময় প্রকল্প এলাকায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট অগ্নিসংযোগসহ ক্ষয়ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অব্যাহত হুমকি-ধমকির কারণে প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

জিওটেক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রকৌশলী একরাম হোসেন বলেন, ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ২০/২২ জন ‘মুখোশধারী সন্ত্রাসী’ প্রকল্প এলাকায় এসে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। শ্রমিকরা বাধা দিলে তাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এতে শ্রমিক মো. আতিকুল, একরামুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, একরামুল হোসেন ও আলি আজগর বাবলুকে আহত করে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন সেট ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।

“ফের হামলার ভয়ে শ্রমিকরা পালিয়ে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে।”

পুনরায় কাজ শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা চেয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ইজিসিবির পক্ষ থেকে কোম্পানি সচিব কাজী নজরুল ইসলাম ফেনীর পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

এদিকে, সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিন ধরে নির্মাণাধীন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ভয়ে হামলাকারীদের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়ান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কয়েকজনের নাম উল্লেখ না করে থানায় সাধারণ ডায়েরি [জিডি] করা হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যহত আছে। প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনের সাংসদ ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “প্রকল্প এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না। হামলার খবর পেয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি।”