কুষ্টিয়ায় প্রধান শিক্ষককে মারধর, কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তারের দাবি

কুষ্টিয়া শহরে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা, প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে স্থানীয় কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ফের মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2022, 04:05 PM
Updated : 2 April 2022, 04:06 PM

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে শহরের লাহিনী এলাকায় শনিবার দুপুরে কয়েকশ শিক্ষার্থী এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।

ইট-বালু দিয়ে লাহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করার অভিযোগ রয়েছে কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল রানা আশার বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলর প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে মারধর করেন এবং হত্যার হুমকি দেন।

পরে প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেন।

শিক্ষককে মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। শনিবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করায় ফের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলে, একজন জনপ্রতিনিধি কীভাবে স্কুলের জায়গা দখল করে নির্মাণসামগ্রী ফেলে, ক্রাশার মেশিনে বিকট শব্দ করে শিক্ষার পরিবেশ দূষণসহ জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি ব্যবহার করে।

নিষেধ করায় প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে বলে অভিযোগ তাদের।

তারা বলে, বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা সময় নেয়। অথচ কাউন্সিলর সোহেল রানা আশাকে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও কাউকেই গ্রপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে কাউন্সিলর এলাকাতেই গা ঢাকা দিয়ে হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান বলেন, “শিক্ষক লাঞ্ছনার মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনগত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখি। একজন জনপ্রতিনিধি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে প্রহার করবে, কিছুদিন আগে সদর উপজেলার বারখাদায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও একজন কাউন্সিলর একই ঘটনা ঘটায়, যা তুচ্ছ করে দেখার সুযোগ নেই।”

তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও পৌর কাউন্সিলর সোহেল রানা আশার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে তার বাড়ি ও পৌরসভা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নিশিকান্ত সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা ও তার অফিস কক্ষ ভাঙচুরের মামলায় তাছের নামের এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধান আসামি কাউন্সিলর সোহেল রানা আশা ছাড়াও এজাহারভুক্ত ভ্যাপচা ফারুক ও আনছের আলীকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাব্বিরুল আলম বলেন, “হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেই সঙ্গে স্কুলমাঠ থেকে সব নির্মাণসামগ্রী দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্যও বলেছি।”