বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে জয়বাংলা পুকুরপাড়ের বধ্যভূমিতে মো. কাজী আনিসুল হক বরুনের রচনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি নাট্যদল পরিবেশন করে ‘গণহত্যায় জয়বাংলা পুকুর’।
এ নাটকের প্রেক্ষাপট বর্ণনায় নির্দেশক কাজী আনিসুল হক বরুন বলেন, ১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল পাকিস্তান হানাদার বাহিনী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদে মিনি ক্যাম্প স্থাপন করে। এখানে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী নর-নারীকে ধরে এনে জুলুম আর নৃশংসভাবে হত্যা করে। হত্যা করে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন জয়বাংলা পুকুরে ফেলা হয়েছে।
“আমাদের নাটকে প্রত্যক্ষদর্শী, জুলুমের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়ান ও অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা হয়েছে জয়বাংলা পুকুরের আবহে। তারপর পুকুরপাড় জুড়ে সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশে পাকিস্তানী বাহিনীর জুলুম আর নৃশংসতার দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।”
“পরিবেশ থিয়েটার পুকারপাড় জুড়ে গাছপালা ও গ্রামীণ পরিবেশের আবহে জয়বাংলার পুকুরপাড়ের সেই স্মৃতিকে তুলে ধরেছে। নাটকের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা হয়েছে।”
এর মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশ এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গোপালগঞ্জের নাট্যকর্মী সপ্তর্শী বিশ্বাস বলেন, “আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। নতুন প্রজম্মের মানুষ হিসেবে গণহত্যার এ নাটকে অভিনয় করেছি। সেই সময়কে অনুধাবন করেছি। সে সময় মুক্তিকামী মানুষ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। স্বজন হারিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বধ্যভূমিতে বিলাপ করেছে। স্বাধীনতার জন্য অগণিত মানুষের ত্যাগ আমাকে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছে।”
জেলা কালচারাল অফিসার আল মামুন বিন সালেহ বলেন, জেলার একটি নাট্যদল দীর্ঘ দিন পরিশ্রম করে গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার মঞ্চস্থ করেছে। শিল্পকলার মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এ নাটকের মূল ভাবনায় ছিলেন। নির্দেশক আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছেন বলেই এটি শিল্পিত ও নান্দনিক হয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘গণহত্যায় জয়বাংলা পুকুর’-এর পরিবেশ থিয়েটার মঞ্চায়ন করা হয়। এর মূল ভাবনায় ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
সারা দেশে এই কর্মসূচির মাধ্যমে গণহত্যা-বধ্যভূমি তথা মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে শৈল্পিকভাবে পৌঁছানো লক্ষ্য বলে তিনি জানান।
“বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযোদ্ধারা একটি আশা নিয়ে সংগ্রম করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশার শিখড়ে পৌঁছে দিতে চাই।”