শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলা: জামিন নিয়ে পলাতক ১১৪ আসামি

ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শাল্লা উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা, লুটপাট ও মন্দির ভাঙচুরের তিন মামলার ৭২ আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে সুনামগঞ্জের আদালত।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2022, 01:27 PM
Updated : 29 March 2022, 01:27 PM

এসব মামলায় জামিন নিয়ে পলাতক আরও ১৪৪ জনের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের বিচারিক হাকিম মো. আব্দুর রহিম মঙ্গলবার এই আদেশ দেন বলে আদালত পরিদর্শক অসীম চন্দ্র দে জানান।

তিনি বলেন, “নোয়াগাঁও গ্রামে হামলায় তিনটি মামলা হয়েছিল। এসব মামলায় ১৮৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আসামিরা জজ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন।

“দুপুরে মামলার এক নম্বর আসামি শহিদুল ইসলাম স্বাধীনসহ ৭২ জন আদালতে উপস্থিত হয়ে ফের জামিন প্রার্থনা করেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে ৭২ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।“

পরিদর্শক বলেন, “১১৪ আসামি জামিন নিয়ে পলাতক হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এসব আসামি জজ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। অভিযোগপত্র দাখিলের আগ পর্যন্ত তাদের জামিনের মেয়াদ ছিল।”

সুনামগঞ্জের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) খায়রুল কবীর রোমেন বলেন, “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনকের জন্মদিনে নোয়াগাঁও গ্রামে পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। ওই ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।

“আসামিদের গ্রেপ্তারের পর সবাই জামিনে ছিলেন। আজ ৭২ জন ফের জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।”

২০২১ সালের ১৫ মার্চ দিরাই উপজেলায় হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সম্মেলনে যান হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। সম্মেলনে মামুনুল হকের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে স্থানীয় এক হিন্দু যুবক ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

ওই ঘটনাকে ‘ধর্মীয় উসকানি’ আখ্যায়িত করে ওই এলাকার মামুনুল হকের অনুসারীরা পরদিন রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেই রাতেই ওই যুবককে আটক করে।

পুলিশ জানিয়েছিল, ১৭ মার্চ সকালে কাশিপুর, নাচনী, চণ্ডিপুরসহ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কয়েক হাজার অনুসারী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে অতর্কিত হামলা চালায়।

হাজারো মানুষের আক্রমণে গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এই সুযোগে হেফাজত নেতার অনুসারীরা গ্রামে প্রবেশ করে তছনছ করে। লুটপাট করে বিভিন্ন বাড়িতে।

আরো পড়ুন: