সোমবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের এক মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ দাবি জানান।
২৩ মার্চ উপজেলার নিমঘটু গ্রামের কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি বিষপানে আত্মহত্যা করেন। তাদের মৃত্যুর পর ২৫ মার্চ রাতে অভিনাথ মার্ডির স্ত্রী রোজিনা হেমরম বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনায় একটি মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ধান ক্ষেতে সেচের পানি না পেয়ে ২৩ মার্চ বিকালে কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি বিষপান করেন। ওইদিন রাত ৯টার দিকে অভিনাথ মার্ডি বাড়িতেই মারা যায়।
রাতেই রবি মার্ডিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মার্চ রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান। মামলায় গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনকে আসামি করা হলেও তিনি এখনও গ্রেপ্তার হননি।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি কল্পনা রায় বলেন, “আদিবাসী নারী মারা গেলে চরিত্রহীন আর পুরুষ মারা গেলে মদপান, এভাবেই আদিবাসীদের মূল্যায়ন করা হয়। একইভাবে অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডি মদপানে মারা গেছে বলে বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপপ্রচার করা হচ্ছে।“
অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের শাস্তির দাবি জানিয়ে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, “এই এলাকায় শুধু আদিবাসীদের জমিতে গভীর নলকূপের পানি দিতে যত নয়-ছয় হয়। এমনকি গভীর নলকূপের আশপাশের আদিবাসীর জমিতেও সঠিকভাবে পানি দেওয়া হয় না।
“পানির অভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক আদিবাসী তাদের জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আদিবাসী কৃষকদের ওপর এই বৈষম্য, অত্যাচার ও নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ দাবি করছি”, বলেন রবীন্দ্রনাথ।
মানববন্ধনে দায়িত্বে অবহেলা এবং ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেন বক্তারা।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ রায় দেবু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গণেক মার্ডি, দপ্তর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আলিন্দ রায় বিশ্বাস, গোদাগাড়ী উপজেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম।
আরো পড়ুন