ফেনীতে দেবরপুত্রকে হত্যায় চাচির যাবজ্জীবন

ফেনীর পরশুরামে দেবরের ছেলেকে হত্যায় এক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। একই সঙ্গে তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়, যা অনাদায়ে আরও তিন মাস সশ্রম কারাভোগ করতে হবে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2022, 02:31 PM
Updated : 24 March 2022, 02:31 PM

ফেনী জেলা ও দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বলে পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান।

দণ্ডিত আর্জিনা আক্তার (৪০) পরশুরাম উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুর বশরের স্ত্রী।

মামলার বরাতে পিপি বলেন, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় তিন বছরের ছেলে মো. তরিকুল ইসলামকে বাড়িতে রেখে মাওলানা আবু বক্কর মাগরিবের নামাজে যান। ফিরে এসে তাকে না পেলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তার মেজ ভাই আবুল বশরের বাড়ি সংলগ্ন বেড়ার পাশে তরিকুলকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পিপি বলেন, মাওলানা আবু বক্কর বিষয়টি পুলিশকে জানালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা। পরে নিহত শিশুর চাচি আর্জিনা আক্তারের আচরণ সন্দেহজনক হলে আবু বক্কর দুই দিন পর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পিপি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই রিযাউল জাব্বাব শিশুটির চাচি আর্জিনা আক্তারকে আটক করে জিঙ্গাসাবাদ করেন; আর্জিনা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তরিকুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

ওই বছরের ২৪ নভেম্বর ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তানিয়া ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দেন আর্জিনা।

২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা একমাত্র আসামি আর্জিনা আক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।

অর্থদণ্ডের টাকা নিহতের পরিবারকে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ছাত্তার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তার মক্কেল উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

আইনজীবীকে লক্ষ্য করে দণ্ডিতের জুতা নিক্ষেপ

এ মামলার রায় ঘোষণার পর আসামিকে এজলাস থেকে বের করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার সময় আদালতের বারান্দায় দণ্ডিত আসামি আর্জিনা আক্তার সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) দিকে জুতা ছুড়ে মারেন।

ফেনী আদালত পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানী বলেন, আদালতের বারান্দায় অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই ঘটনায় পিপি বা তার সহকারীরা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। আসামিকে বিকালে হাজতখানা থেকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনার বিষয়ে জানতে ফেনীর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহম্মদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার সহকারীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।