বিএডিসি উদ্ভাবিত আলুর নতুন জাতগুলো বিভিন্ন জায়গার মাটিতে কেমন হয় তা দেখতেই পরীক্ষামূলকভাবে গোপালগঞ্জ পৌরসভার সোনাকুড় গ্রামের কৃষক মো. রেজাউল হক সিকদারের দুই একর জমিতে চাষ করা হয়।
এক সপ্তাহ আগে সেগুলো পরিদর্শন করেন বিএডিসির চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
‘মানসম্মত আলু বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় চাষ করা আলুর জাতগুলো হলো- সান্তানা, সানসাইন, ডোনাটা, কুইনএনি, প্রাডা, প্রিমাভেরা, আডাটো, রাশিদা, সেভেন ফোর সেভেন, এডিসন, ক্যারোলাস, মিউজিকা, ফরিদা, গ্রানোলা, ডায়মন্ড, বারি-৪১, অ্যাস্টারিক্স, বারি-৩৫, বারি-৭৯ এবং বারি-৩৭।
এ জাতের আলু চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন বলে মনে করেন তিনি।
হায়াতুল্লাহ বলেন, “আমাদের দেশে প্রতি বছর এক কোটি ১০ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়। আমাদের আলুর চাহিদা রয়েছে ৮০ লাখ টন। ৩০ লাখ টন উদ্বৃত্ত থাকছে। রাশিয়া আমাদের আলু নিতে চাচ্ছে। তারা আলু নিলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের আলুর চাহিদা বাড়বে।
“দেশের বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে। কৃষক আলুর ভালো দাম পাবেন বলে আমরা আশা করছি। এ জন্য আমরা নতুন জাতের আলু চাষাবাদ সম্প্রসারণের কাজ করছি।”
প্রকল্পের পরিচালক মো. আবীর হোসেন বলেন, “নতুন জাতের আলুর বাম্পার ফলন পাওয়া গেছে। এ জাতের আলুর বহুমুখী ব্যবহার করা যেতে পারে। রপ্তানিযোগ্য এ আলুতে প্রচুর পরিমাণ ড্রাই উপাদান রয়েছে।
গোপালগঞ্জ বিএডিসির উপপরিচালক দীপংকর রায় বলেন, আমরা গোপালগঞ্জে বীজ আলু ও রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদন করছি। এ বছর ২০০ একরে বীজ আলু উৎপাদন করেছি। ১০ একরে রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদিত হয়েছে।
“এ ছাড়া দুই একরে ২০ জাতের আলুর মাল্টি লোকেশন পারফর্মেন্স ট্রায়াল করা হয়েছে। ট্রায়ালে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। নতুন জাতের আলুর চাষাবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষিতে সমৃদ্ধি আসবে।”
সোনাকুড় গ্রামের কৃষক রেজাউল হক সিকদার বলেন, “নতুন জাতের আলু প্রচলিত আলুর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন দিয়েছে। এ আলুতে রোগবালাই নেই। স্বাভাবিক পরিচর্যায় এ আলু ভাল ফলন দেয়।
পরিবর্তিত আবহাওয়ায় নতুন জাতের সব আলু খাপ খাইয়ে নিতে পারে জানিয়ে রেজাউল বলেন, “আমি অধিক ফলন পেয়েছি। আমার ক্ষেতের আলু দেখে অনেকেই আগামী বছর এসব জাতের আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”