ইউপিডিএফ সংগঠকের মৃত্যু: খাগড়াছড়িতে আধাবেলা সড়ক অবরোধ

খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফের এক নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2022, 06:21 AM
Updated : 21 March 2022, 06:21 AM

এই অবরোধের ফলে সোমবার ভোর ৬টা থেকে খাগড়াছড়ির সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে।

বেলা ১২টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলে বলে দলের প্রসীত খিসা গ্রুপের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের মুখপাত্র নিরন চাকমা জানান।

অবরোধের মধ্যে ভোরে জেলা সদরের মাটিডাঙায় একটি অটোরিকশায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় পিকেটাররা; শহরে নারায়ণ খাইয়া রেড স্কয়ার চত্বরে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করতে দেখা যায় ইউপিডিএফ এর ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কর্মীদের।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ বলেন, “অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়, পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দেয়।”

মৃত মিলন চাকমা (৪৭) দীঘিনালায় ইউপিডিএফের সংগঠক ছিলেন; গত ১৫ মার্চ সকালে দীঘিনালার বাবুছড়ার বাঁশটালা এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর একটি টহল দল তাকে আটক করে।

সে সময় তার বাসায় তল্লাশি করে একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, তিনটি ওয়াকিটকি, আটটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ ও একটি পোর্টেবল জেনারেটর উদ্ধার করার কথা জানানো হয়।

এরপর ১৬ মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মিলন চাকমাকে দীঘিনালা সদরে নেওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছিল। ‘হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে’ তার মৃত্যু হয়েছে বলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান।

মিলন চাকমা দীর্ঘদিন ধরে দীঘিনালা এলাকায় ‘চাঁদাবাজি, হত্যা-খুনমহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত’ ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য। তার বিরুদ্ধে দীঘিনালা থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।

তবে তার মৃত্যু নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য প্রত্যাখান করে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে ইউপিডিএফ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মিলনকে ‘নির্যাতন চালিয়ে হত্যা’ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।

অবরোধের মধ্যে সোমবার খাগড়াছড়ি সদরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, জেলা শহরের শাপলা চত্বর, চেঙ্গী স্কয়ারসহ বিভিন্ন সড়কে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করেছে।

তবে সাজেক যাওয়ার পর্যটকবাহী পরিবহন এবং জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সরাসরি সড়ক পরিবহন বন্ধ ছিল। খাগড়াছড়ি থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে না যাওয়ায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

সোমবার সাপ্তাহিক হাটের দিন হলেও গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় সকালে দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতা বিক্রেতারা আসতে পারেননি হাটে, দুপুন পর্যন্ত বাজারও ফাঁকাই দেখা যায়।