‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’ খ্যাত প্রাণিটির বিলুপ্তি ঠেকাতে ২০১৬ সালে এই পরিচর্যাকেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। গত পাঁচ বছরে মোট ১১৪টি শকুন এখান থেকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এখন সেখানে অবমুক্তির অপেক্ষায় ১৯টি শকুন রয়েছে বলে দিনাজপুরের সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল-মামুন জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি বছর শীত মৌসুমে হিমালয়ের পাদদেশসহ এর আশপাশ থেকে এই শকুনগুলো আসে। মূলত খাদ্যাভাবসহ বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয়ে এরা মাটিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজন গিয়ে তা উদ্ধার করে এখানে নিয়ে আসে।”
“বন বিভাগের এমন উদ্যোগ শকুনের অস্তিত্ব রক্ষায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, তেমনি শিক্ষার্থীরা এখানে এসে স্বচক্ষে শকুন দেখা এবং প্রাণিটি সম্পর্কে জানান সুযোগ পাচ্ছে”, বলেন বন কর্মকর্তা।
সম্প্রীতি শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিশেষভাবে বানানো খাঁচায় শকুনগুলো বসে আছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেখা গেল খাঁচার সামনে ভিড় করতে। বড় বড় শকুন দেখে তারা যে খুশী, এটি তাদের উচ্ছ্বাস দেখে বোঝা গেল।
সেখানেই কথা হয় পরিচর্যাকেন্দ্রে তদারকির দায়িত্বে থাকা বন বিভাগের কর্মচারী বেলাল হোসেনের সঙ্গে।
একদিন পর পর প্রতিটি শকুনের জন্য ৫০০ গ্রাম ওজনের ব্রয়লার মুরগি দিতে হয় উল্লেখ করে বেলাল বলেন, “চিকিৎসা শেষে উড়তে সক্ষম হলে এদের পায়ে বাংলাদেশ লেখা বিশেষ ট্যাগ লাগিয়ে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়। প্রতি বছরের মার্চের শেষ অথবা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে অবমুক্ত করা হয়।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষক ফজলুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিলুপ্তি ঠেকাতে এ ধরনের পরিচর্যাকেন্দ্রে শকুনের বংশবৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ প্রকৃতির নিয়মের বাইরে এদের প্রজনন সম্ভব নয়।”