ওয়াজ-মাহফিলে চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ব্যাখ্যা দিলেন নিজে

লক্ষ্মীপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর উদ্দেশে রাতে উচ্চশব্দে গান-বাজনা না করাসহ কিছু বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2022, 01:50 PM
Updated : 15 March 2022, 03:05 PM

এলাকায় বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে উপস্থিত হয়ে তিনি মা-বোন ও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাছাত্রীদের বোরকা পরে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দেন। স্কুলে মোবাইল ফোন নিতে নিষেধ করেন।

এদিকে, এই ব্ক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এক ব্যক্তি ফেইসবুকে লেখার পর চেয়ারম্যান নিজে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ তার এই বক্তব্যকে ‘সতর্কবার্তা’ বলে উল্লেখ করেন।

তার এই বক্তব্যকে হাফেজ মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ফেইসবুকে ‘নির্দেশনা’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন বলে খালেদ অভিযোগ করেছেন।

খালেদ সাইফুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাতে উচ্চশব্দে গান-বাজনা হলে মানুষ ঘুমাতে পারে না। এজন্য রাতে গান-বাজনা না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। মানুষ অভিযোগ দিলে জরিমানা করা হবে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমার ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার নিয়ম রয়েছে।

“আমার ফেইসবুক আইডি নেই। কে বা কারা আমার নাম দিয়ে এটি ফেইসবুকে চালাচ্ছে। আমি এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

ওই লোককে ‘চেনেন না’ দাবি করে খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, “ওই লোক আমার সতর্কবার্তাকে ভিন্নরূপে প্রচার করছেন। আমি ওই ফেইসবুক ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করব।” 

চেয়ারম্যান খালেদ আরও বলেন, “একজন আলেম হিসেবে মা-বোন ও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাছাত্রীদের পর্দার জন্য বোরকা পরে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। স্কুলে মোবাইল নিয়ে গেলে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটবে। এতে স্কুলে যেন শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিতে না পারে সেজন্য অভিভাবকদের সতর্ক করার জন্য ওয়াজ-মাহফিলে আমি কথা বলেছি।

“আমার কথাগুলো কোনো আইন নয়, সতর্কবার্তা ও পরামর্শ। রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে আমি যেতে পারি না। আমি বলেছি এক রকম, লোকজন প্রচার করছে অন্য রকম।”

হাফেজ মনিরুল ইসলামের ফেইসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো – “আলহামদুলিল্লাহ, শুরু হল ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। কাদিরা ইউনিয়নের বিয়ের অনুষ্ঠানে কোনো গানবাজনা চলবে না। যদি চলে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। বাজারে কোনো গানের আওয়াজ যেন না শুনি। তোমার মন চাইলে এয়ার ফোন দিয়ে শোন, আরেকজনকে শুনাইও না। যারা বক্স ভাড়া দাও, মনে রেখ এমন বাজেয়াপ্ত হবে কোনোদিন ফিরে পাবে না।

“কোনো অভিভাবক বোরকা ছাড়া মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন না। যারা পাঠাবেন তাদের তালিকা করব। কী ব্যবস্থা নেই, সেটা পরে দেখবেন। স্কুলে কোনো ছাত্র-ছাত্রী মোবাইল নিতে পারবে না। মোবাইল বাড়িতে চালাবে। অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ এটা খেয়াল রাখবেন।”

এ বিষয়ে কমলনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত চলছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি বলেছেন –ফেইক আইডি থেকে এসব অপ-প্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেছেন।”