ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদনের পর মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ার পর দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় জিডি হলেও মামলা হয়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2022, 03:12 PM
Updated : 14 March 2022, 03:12 PM

পুলিশ বলছে, রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ভিসেরা এবং জব্দকৃত ‘নাপা সিরাপ’ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর মামলা দায়েরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার জেলার আশুগঞ্জে প্যারাসিটামল সিরাপ ‘নাপা’ খাওয়ার পর দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি করেছে।

এদিকে, যে ফার্মেসি থেকে ওই ‘নাপা সিরাপ’ কেনা হয়েছিল সেই ‘মা ফার্মেসির’ মালিক মো. মঈন উদ্দিন ঘটনার পর পরই গা ঢাকা দিয়েছেন। তারও সন্ধান পাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

রোববার (১৩ মার্চ) আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামে মঈন উদ্দিনের বাড়ি গিয়ে তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।

আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান বলেন, “রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য সেই সিরাপ এবং ভিসেরা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিষক্রিয়া হয়েছিল কিনা – সেটি তো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে”

তিনি বলেন, “ঘটনার পর ভয়ে ফার্মেসির মালিক পালিয়েছে। কী কারণে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে, আগে সেটি আমরা জানার চেষ্টা করছি। ফার্মেসি মালিকের কোনো অপরাধ থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৃহস্পতিবার রাতে আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে ‘প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ার পর’ ইয়াসিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে তাদের পরিবার। শিশু দুটি ওই গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক সুজন খানের ছেলে।

ঘটনার বর্ণনায় শিশুদের মা বলেন, দুই ছেলের জ্বর হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়ির পাশের একটি ফার্মেসি থেকে তারা ‘নাপা সিরাপ’ এনে খাওয়ান। তারপর দুই ছেলেরই বমি শুরু হয়।

অবস্থার অবনতি হলে তাদের প্রথমে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, এরপর জেলা সদর হাসাপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে আনার পথে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ইয়াসিনের মৃত্যু হয়। আর বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাত সাড়ে ১০টায় মারা যায় মোরসালিন।

এ ঘটনায় এরই মধ্যে সারাদেশের পাইকারি ও খুচরা দোকান পরিদর্শন করে নাপা সিরাপের একটি ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

এ অবস্থার মধ্যেই রোববার সকালে দুর্গাপুর গ্রামে তদন্তে আসে ঔষধ প্রশাসনের ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি। তারা দুই শিশুর মা লিমা বেগম, চাচা উজ্জ্বল মিয়া ও দাদী লিলুফা বেগমের সাক্ষ্য নেন।

দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে পুলিশ। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ।

আরও পড়ুন: