একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ: দুজন গ্রেপ্তার সাতক্ষীরায়

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2022, 04:51 PM
Updated : 13 March 2022, 04:51 PM

রোববার বিকালে আশাশুনির চাপড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান।

এরা হলেন আশাশুনির মজিবর রহমান ধনু এবং চাঁপড়ার আবুল হোসেন।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ দুইজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। রোববার তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

“আদেশ পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মজিবর রহমান ধনুকে আশাশুনির পাইথালীর হাসেম রাজাকারের বাগানবাড়ি থেকে এবং আবুল হোসেনকে চাঁপড়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

গ্রেপ্তারের পরপরই তাদের সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

পুরাতন সাতক্ষীরার বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আলাউদ্দীন সানা বলেন, আশাশুনি গ্রামের গোরাঠাকুরকে হত্যা ও তার মেয়েকে ধর্ষণ করে গুম করার অভিযোগ রয়েছে মজিবর রহমান ধনু, আবুল হোসেন ও লিয়াকত কমান্ডারের বিরুদ্ধে।  

শহীদ আব্দুর রাজ্জাককেও লিয়াকত কমান্ডার হত্যা করেছেন বলে আলাউদ্দিনের অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া চাপড়ার আনিসুর রহমান, শরাফপুর গ্রামের মেঘনাথ দাস, তারাপদ দাস ও কেষ্টপদ দাসকে একাত্তর সালে গুলি করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

আলাউদ্দীন সানা জানান, তিনি ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা করেন সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। পরবর্তীতে মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার পরামর্শ দেয় আদালত।

এরপর তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাইলপত্র হস্তান্তর করেন জানিয়ে বলেন, ‘প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্র বাদী হয়ে একটি মামলা করে। মামলা নম্বর আইসিটি বিডি মিস কেস ৩/২২। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত পরিদর্শক আমিনুর রশিদ, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান ও সহকারী এটর্নি জেনারেল রাজিয়া সুলতানা চমন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাতক্ষীরা জেলার সাক্ষ্য সমম্বয়কারী শাহ্ আলম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তারা সবশেষ গত মাসের ১৭ তারিখে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার স্থান পরিদর্শন করেন। এর আগেও তারা বেশ কয়েকবার সাতক্ষীরায় এসেছেন। সরেজমিনে পরিদর্শন ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তারা ট্রাইবুনালে অভিযোগপত্র দেন।

তবে অন্যতম আসামি লিয়াকত কমান্ডার গত বছর মারা যাওয়ায় তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। রোববার বাকি দুজন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয় ট্রাইবুনালের কাছে। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে রোববারই গ্রেপ্তার করা হয় সাতক্ষীরার আশাশুনির রাজাকার হিসেবে পরিচিত এই দুব্যক্তিকে।