‘নাপা সেবনে’ শিশুর মৃত্যু: ‘রহস্য উদঘাটনে’ সময় লাগবে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় প্যারাসিটামল সিরাপ-নাপা সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর যে অভিযোগ উঠেছে তা ‘রহস্যজনক’ বলে মনে করছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2022, 09:16 AM
Updated : 13 March 2022, 01:56 PM

ঘটনার তিনদিনের মাথায় রোববার দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে দুই শিশুর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।

পরে তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আকিব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “এই রহস্য উদঘাটন করতে হয়তো সময় লাগবে।”

বৃহস্পতিবার রাতে আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে ‘প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ার পর’ ইয়াসিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে তাদের পরিবার। শিশু দুটি ওই গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক সুজন খানের ছেলে।

ঘটনার বর্ণনায় শিশুদের মা বলেন, দুই ছেলের জ্বর হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়ির পাশের একটি ফার্মেসি থেকে তারা নাপা সিরাপ এনে খাওয়ান। তারপর দুই ছেলেরই বমি শুরু হয়।

অবস্থার অবনতি হলে তাদের প্রথমে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, এরপর জেলা সদর হাসাপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে আনার পথে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ইয়াসিনের মৃত্যু হয়। আর বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাত সাড়ে ১০টায় মারা যায় মোরসালিন।

এ ঘটনায় এরই মধ্যে সারাদেশের পাইকারি ও খুচরা দোকান পরিদর্শন করে নাপা সিরাপের একটি ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

এ অবস্থার মধ্যেই দুর্গাপুর গ্রামে তদন্তে আসে ঔষুধ প্রশাসনের ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি।  কমিটির অপর পাঁচ সদস্যের মধ্যে দুইজন উপ-পরিচালক, দুইজন সহকারী পরিচালক ও একজন পরিদর্শক রয়েছেন।

তারা দুই শিশুর মা লিমা বেগম, চাচা উজ্জ্বল মিয়া ও দাদী লিলুফা বেগমের সাক্ষ্য নেন।

গণমাধ্যমকে ডা. আকিব হোসেন বলেন, “শিশুদের স্বজনরা জানিয়েছে, ওষুধ খাওয়ানোর পরই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

“ওষুধটিতে কী এমন উপাদান ছিল, যেটি খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে রিঅ্যাকশন করল। এটি আসলে রহস্যজনক বিষয়। এই রহস্য উদঘাটনে সময় লাগবে।”

তদন্ত কমিটির প্রধান আরও বলেন, “যে সিরাপটি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একই ওষুধের অন্যান্য ব্যাচের ওষুধ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।”

দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে পুলিশ। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ। দুটি তদন্ত কমিটি করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আরো পড়ুন