সাঁওতালদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক উৎসব গাইবান্ধায়

বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাঁওতালদের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া উৎসব সম্পন্ন হয়েছে।

তাজুল ইসলাম রেজা গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2022, 02:52 PM
Updated : 11 March 2022, 02:52 PM

সাপমারা ইউনিয়নের সাঁওতাল পল্লির জয়পুর মাঠে শুক্রবার সকালে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অবলম্বন’ এর সহযোগিতায় নাগরিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ গাইবান্ধা’ এই উৎসব আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।

বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে। ৫০টির মত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষার ঐতিহ্য, লোকগাথা, প্রবাদ-প্রবচন হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের ২০ লাখেরও বেশি শিশু নিজেদের সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাবে।

মাতৃভাষায় অক্ষরজ্ঞান না থাকায় সংস্কৃতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বলেন ফিলিমন।

আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক ও জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, একটি শিশুর স্বকীয়তা, সৃজনশীলতা ও মেধার বিকাশ তার মাতৃভাষার মাধ্যমে হয়। কিন্তু চর্চার অভাবে আদিবাসী বর্ণমালার সবই এখন বিলুপ্তপ্রায়। ফলে নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নিজস্ব ভাষায় তাদের অক্ষর জ্ঞান নেই।

আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তক, জেলায় জেলায় আদিবাসীদের ’কালচারাল অ্যাকাডেমি’ প্রতিষ্ঠাসহ ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

উৎসবে উপজেলার মাদারপুর ও জয়পুরপাড়ার সাঁওতাল পল্লির শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর খেলাধুলা, নাচ-গান, ছবি আঁকা ও তীর ছোড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

পরে বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে জন উদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, জেলা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির তনু, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, মানবাধিকার কর্মী অঞ্জলী রানী দেবী, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু ও তৃষ্ণা মুর্মু অংশ নেন।