টাঙ্গাইলে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ২ জন গ্রেপ্তার

একাত্তরে বুদ্ধিজীবীসহ গণহত্যার অভিযোগে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2022, 12:24 PM
Updated : 4 March 2022, 04:26 PM

গোপালপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উপ-পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের কাছে তারা এই তথ্য পেয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের বেড়াডাকুরি গ্রামের সবুর মাস্টারের ছেলে মনিরুজ্জামান কোহিনূর ও চাতুটিয়া গ্রামের শফি উদ্দীনের ছেলে আলমগীর হোসেন তালুকদার।

ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা-মোতাবেক কোহিনূরকে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে এবং আলমগীরকে গোপালপুর পৌরশহরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি মোশারফ মামলার নথির বরাতে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুইজনই একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী ও রাজাকার হিসাবে কাজ করেন। একাত্তর সালের ৩০ জুন মনিরুজ্জামান কোহিনূর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল বাজারে হামলা চালান এবং ঝাওয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্রবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও লেখক মসলিম উদ্দীনকে আটক করে গোপালপুর ক্যাম্পে নিয়ে টানা এক সপ্তাহ নিযার্তন করেন। তারপর তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়।

তাছাড়া উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে গ্রেপ্তারকৃত দুইজনের বিরুদ্ধে।

ওসি মোশারফ আরও বলেন, একাত্তরের ৩০ সেপ্টেম্বর কোহিনূর ও আলমগীর একদল রাজাকার ও আলবদর সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা এমএনএ হাতেম আলী তালুকদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। তাছাড়া তারা শতাধিক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পর ১৭ জনকে হত্যা করেন।

মামলায় বলা হয়, একাত্তরের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত হওয়ার আগের দিন হানাদার বাহিনীর সঙ্গে কোহিনূর ঢাকায় যান। ১৬ ডিসেম্বর রমনা রেসকোর্স ময়দানে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি খান সেনার সঙ্গে কোহিনূরও আত্মসমর্পন করেন। পরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ভারতের জব্বলপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন। শিমলা চুক্তি অনুযায়ী মুক্তি পেয়ে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে পাকিস্তান চলে যান কোহিনূর। পাকিস্তানি নাগরিক হিসাবে নব্বইয়ের দশকে জাপান যান। ২০০২ সালে কোহিনূর বাংলাদেশে ফেরেন। তিনি বর্তমানে একজন শিল্পপতি এবং দেশের একটি শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা।

ওসি মোশারফ বলেন, আলমগীর হোসেন তালুকদার ১৯৭৬ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসাবে যোগ দেন এবং পরে গোপালপুর পৌরশহরের সূতী দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসাবে গত নভেম্বরে অবসরে যান বলে মামলার নথিতে বলা হয়েছে।

কোহিনূরকে ট্রাইবুনালের আদেশে জেলহাজতে আর আলমগীর হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান। তাকে রোববার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে বলেও তিনি জানান।