পানপট্টির যুদ্ধ: ‘কাল ঈদ, রাতেই আক্রমণ, দখলের পর নামাজ’

পর পর চারবার আক্রমণ করে ব্যর্থ হন মুক্তিযোদ্ধারা, পঞ্চমবারের মাথায় আর নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি হানাদার বাহিনী। টানা ১২ ঘণ্টার যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর গলাচিপা থানার পতন হয়।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিসঞ্জয় কুমার দাস, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2022, 03:28 AM
Updated : 4 March 2022, 03:28 AM

পটুয়াখালীর মুক্তিযুদ্ধে ‘পানপট্টির যুদ্ধ’ নামে খ্যাত এই সম্মুখ সমরের অনেক যোদ্ধাই আজ আর জীবিত নেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো, আবদুল বারেক হাওলাদার, আব্দুল মজিদ হাওলাদার, কে এম নূরুল হুদাসহ কয়েকজন এখনও জীবিত আছেন।

সম্প্রতি তাদের বয়ানে গলাচিপা উপজেলার পানপট্টির খাজুরগাছিয়া খালের দুই পারে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে সেই যুদ্ধের বর্ণনা শুনেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা প্রথম আক্রমণ করি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে, দ্বিতীয়বার আক্রমণ করি তার চার-পাঁচদিন পর। ১৭ নভেম্বর তৃতীয়বার, আর চতুর্থবারে ১৮ নভেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টানা যুদ্ধ হয়। 

“২৪ নভেম্বর থানা ছেড়ে সব পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়ে যায়। ২৫ নভেম্বর থানা দখল করে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প করা হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বর মুক্ত হয় পটুয়াখালী জেলা।”

ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের এই দলটি পানপট্টির যুদ্ধ ছাড়াও পটুয়াখালীর কালিশুরী, বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্মুখ সমরে লড়াই করে বলে জানান আরেক যোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পটুয়াখালী জেলার সাবেক কমান্ডার আবদুল বারেক হাওলাদার।

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই থানাতেই অবস্থান নিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেছে। পরে মুক্তিযোদ্ধার থানায় দখল নিয়ে অস্ত্র নিজেদের হেফাজতে নেয়।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর ইপিআর সদস্য ওস্তাদ সালাম, আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন বাঁশের লাঠি দিয়ে ৩০-৪০ জন ছাত্রকে ট্রেনিং করান। এম এ রব মিয়া ও আব্দুল বারেক মিয়া গলাচিপা থানা থেকে গুলি ছাড়া রাইফেল এনে দিয়েছিলেন।

“১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় পটুয়াখালী শহরে পাকিস্তানি বাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে শেল নিক্ষেপ করে। এরপরই আমরা ভারতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই; যদিও আগেই সানু ঢালী, আব্দুস সালাম, ফজলু গাজী ও ডাক্তার আব্দুল মালেক ভারতে চলে গেছেন। রব মিয়া আমাদের খরচের জন্য ২০০ টাকা দেন।“ 

আবদুল বারেক হাওলাদার বলেন, “বরিশাল, ফরিদপুর, যশোর হয়ে শেষে দুই টাকা দালালকে দিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেই। বনগাঁ থেকে বশিরহাট যাই। বশিরহাট থেকে যাই কলকাতায়। সেখানে ছিলেন ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জলিল। বিহারে চাকুদিয়া সেনানিবাসে সাত-আট দিন রাখার পর প্রশিক্ষণের জন্য ব্যারাকপুর ক্যাম্পে পাঠানো হয় আমাদের। আমাদেরকে বিহারে এক মাসের ট্রেনিং করানো হয়।“

“ট্রেনিং শেষে দেখি, পটুয়াখালী ও বরগুনার লোকজন মিলে একটি প্লাটুন হয় না। এক প্লাটুনে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা। এক প্লাটুন না হলে মেশিনগান পাওয়া যায় না। আমাদের তখন বড় যুদ্ধের স্বপ্ন। মেশিনগান চাই-ই। সেই দলে কে এম নূরুল হুদা (সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি), হাবিবুর রহমান শওকত, খোকনও ছিল। তারপরেও আমাদের ৪০ জন হতে কয়েকজন বাকি ছিল। তখন সিলেটের মজিদ, খুলনা ও ঢাকার কয়েকজন মিলে ৪০ জন হয়ে যায়। দলটি সুন্দরবনের দিকে পথ দেয়।“

সুন্দরবনের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জিয়া উদ্দিন। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে হামলা চালান। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ করেন। নূরুল হুদার নেতৃত্বে ওই রাতেই মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনা জেলার বামনার বুকাবুনিয়ায় চলে আসেন।

পটুয়াখালীর কালিকাপুরের মাদবর বাড়ির গণকবর। ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল এখানে ১৯ বাঙালি নারী-পুরুষকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।

পরে ক্যাপ্টেন মেহেদী পটুয়াখালী ও গলাচিপা মিলে একটি জোন করে নুরুল হুদাকে গ্রুপ কমান্ডার ও হাবিবুর রহমান শওকতকে ডেপুটি কমান্ডার করে পাঠিয়ে দেন। তারা গলাচিপার আগুনমুখা নদের দক্ষিণ পানপট্টি গ্রামের চলে আসেন। দিনটি ছিল ঈদের আগের দিন। পানপট্টি গ্রাম থেকে থানা বেশি দূরে নয়।

গ্রুপ কমান্ডার কে এম নূরুল হুদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারত থেকে আমরা সাত জন মুক্তিযোদ্ধা আসি। তখন গলাচিপার এমপি ছিলেন বারেক মিয়া। উনার সঙ্গে দেখা করার পর উনি বললেন, পানপট্টিতে রব মিয়া আছেন, উনার কাছে গিয়ে রিপোর্ট করার জন্য। আমরা দেরি না করে সেটাই করি। কখনও হেঁটে, কখনও নৌকায় করে আমরা পানপট্টিতে পৌঁছাই। আমাদের দেখে রব মিয়া খুব খুশি হলেন।”

গোলাম মোস্তফা টিটো সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বলেন, “দুপুরে স্থানীয় রব মিয়ার বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়ার ব্যবস্থা হয়। অনেক দিন পর আমরা মাংস দিয়ে ভাত খাই।

“খাওয়া-দাওয়ার পর নূরুল হুদা আমাদের বললেন, আগামী কাল ঈদ। তাই আজ রাতেই থানা আক্রমণ করে দখল করব। থানার দখল নিয়েই কাল সকালে ঈদের নামাজ পড়ব। পরিকল্পনা মতো, গলাচিপা হাইস্কুল বর্ডিংয়ের কাছে একটি গ্রুপ আর তার একটু পশ্চিম পাশে টিঅ্যান্ডটি অফিসে আরেকটি গ্রুপ অবস্থান নেয়। টিঅ্যান্ডটি অফিসের গ্রুপটির কাজ হচ্ছে ওয়ারলেস অকেজো করে দেওয়া। থানার সামনে একটি বাঙ্কার আছে। সেখানে গ্রেনেড চার্জ করার দায়িত্বে ছিলাম আমি ও বাকু। টানা কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধ হয়। কিন্তু পাকিস্তানিরা সারেন্ডার করেনি। আমরা পিছু হটে আবার পানপট্টি চলে যাই। সেখানেই ক্যাম্প করে থাকি।”

চার-পাঁচ দিন পর মুক্তিযোদ্ধারা আবার গলাচিপা থানা আক্রমণ করে। এবার থানার পূর্ব ও উত্তর দিক দিয়ে আক্রমণ করা হয়। সেদিনও পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেনি।

১৭ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো থানা আক্রমণ করা হয়। এবার পশ্চিমে নদী পথ খোলা রেখে তিনদিক থেকে আক্রমণ করা হয়। উত্তর দিকের অবস্থানে থাকা মতিন নামের এক মুক্তিযোদ্ধার হাতের এসএলআর থেকে হঠাৎ ফায়ার হয়ে যায়। অন্য মুক্তিযোদ্ধারা তখনও পজিশন নেয়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কায় মুক্তিযোদ্ধারা সেদিনও পিছু হটে আসেন।

পটুয়াখালীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত আলা উদ্দিন পার্ক।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, সেই রাতেই পটুয়াখালীতে পাকবাহিনীর মেজর ইয়ামিনকে খবর পাঠানো হয়। মেজর বড় একটি ট্রুপ নিয়ে পটুয়াখালী থেকে গলাচিপা চলে আসেন। কিন্তু এ খবর মুক্তিযোদ্ধারা জানত না। অপরদিকে ক্লান্ত মুক্তিযোদ্ধারা তখন ঘুমে ছিল।

১৮ নভেম্বর ভোররাতে পানপট্টির গেদু মুসল্লি নামে এক কৃষক ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে দেখতে পান, পাকিস্তানি আর্মিরা বারকানিয়ায় জড়ো হচ্ছে। গেদু মুসল্লি তখন পানপট্টির মাঝিবাড়ির হারুন ও আলমকে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে খবর পাঠায়। তারপরই যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন মুক্তিযোদ্ধারা।  

আবদুল বারেক হাওলাদার বলেন, “আমাদের সবচেয়ে ঝুঁকি ছিল উত্তর ও পশ্চিম দিকে। বরিশালের জাহাঙ্গীর আমাদের মেশিনগান চালাত। নূরুল হুদা তাকে বিভিন্ন দিক থেকে মেশিনগানের গুলি করার জন্য নির্দেশ দিলেন। আমরা পশ্চিম দিকে খেজুরগাছিয়া খালের পূর্বপাশে অবস্থান নেই। খালের পাড়কে আড়াল করে অবস্থান নেই। উত্তর দিক থেকে খাল দিয়ে ক্যাম্পে আসতে একটি ছোট বাঁশের সাঁকো ছিল। পাকবাহিনী সেই সাঁকো পার হতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়ে।

“পাকবাহিনী সংঘটিত হয়ে এবার পশ্চিম দিক দিয়ে আসা শুরু করে। ছোট খালের দুই পাড়ে দুই পক্ষ অবস্থান নেয়, মুখোমুখি। পূর্ব পাশে মুক্তিবাহিনী আর পশ্চিমে পাকিস্তানি বাহিনী। তুমুল গোলাগুলি চলছে। আড়াই ঘণ্টা গোলাগুলির পর তিনজন রাজাকারের লাশ পাওয়া যায়। পাঁচ-ছয় জন পাকিস্তানি সৈন্য আহত হয়। অবস্থা খারাপ দেখে পাকবাহিনী আমাদের ক্যাম্পের দক্ষিণ দিকের একটি খালি ভিটা (তালুকদারের ভিটা) থেকে মর্টার হামলা করে। মর্টারের গোলায় সহযোদ্ধা রবীন্দ্র নাথ হালদার খোকন আহত হন।

“পাকবাহিনীর সমরাস্ত্র দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মুক্তিযোদ্ধা মতি। ও মাটিতে পড়ে গেছে। আমি ওর পিঠের উপর উঠে গুলি চালাতে থাকি। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ও জ্ঞান ফিরে পায়। জ্ঞান ফিরে পেয়ে মতি আবার গুলি চালাতে থাকে।“

গোলাম মোস্তফা টিটো বলেন, “সেদিন আমাদের ভাগ্য সহায় ছিল। ক্যাম্পের কাছে প্রচুর নারিকেল ও ছৈলা গাছ থাকায় মর্টার শেল লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। এদিকে আমরাও তুমুল বেগে গুলি করতে থাকি। বিকালের দিকে পাকবাহিনীর মেজর ইয়ামিন পালিয়ে যান। ইয়ামিন চলে যাওয়ায় রাজাকাররাও পালিয়ে যায়। কিন্তু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বড় একটি অংশ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। ওরা আবার সংঘটিত হয়ে ক্যাম্পের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে আক্রমণ চালায়। তিন দিক দিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ হতে থাকে। সন্ধ্যার পরেও গুলি করতে থাকে। ৭টার দিকে পাকবাহিনী পানপট্টি থেকে পালিয়ে যায়।

পটুয়াখালীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত আনসার ক্যাম্প। এখানে সাত বাঙালি আনসার সদস্যকে হত্যা করে হানদাররা।

কে এম নূরুল হুদা বলেন, “পাকবাহিনী ও রাজকাররা আমাদের লোকেশন জেনে পটুয়াখালী থেকে নৌকায় ওই এলাকায় পৌঁছেছিল। তাদের হামলায় পটুয়াখালী শহরের রবীন্দ্রনাথ হালদার খোকন আহত হয়। তার হাতের কব্জির নিচে বেশ চোট লাগে। সকাল থেকে রাত অবধি সম্মুখ যুদ্ধ হয়।

“পরে জানতে পারি, হানাদার বাহিনী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ওই সময় আমাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। সবাই সেদিন জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন।”

মুক্তিযোদ্ধারা ১৯ নভেম্বর গলাচিপা-চরকাজল নদী পার হয়ে চরকাজল ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে আবার গলাচিপা থানা আক্রমণের পরিকল্পনা করে মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু ২৪ নভেম্বর থানা ছেড়ে পাকিস্তানিরা সবাই পালিয়ে যায়। ২৫ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা থানা দখল করে অস্ত্র নিয়ে নেয়। সেদিনই মুক্ত হয় গলাচিপা।

৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদারদের কোণঠাসা করে ফেলেন। ওই রাতেই লঞ্চে করে পটুয়াখালী থেকে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। ৮ ডিসেম্বর মুক্ত হয় পটুয়াখালী। মুক্তিযোদ্ধারা প্রথমে শহীদ আলাউদ্দিন শিশু পার্কে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।

যুদ্ধের সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতে ১৯৯৬ সালে স্তম্ভ তৈরি করা হয়। এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন ইউএনও মো. নুরুল ইসলাম। সেখানে যোদ্ধাদের নাম আছে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পটুয়াখালী জেলার সাবেক সহকারী কমান্ডার আব্দুল মজিদ হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শহরের অনেক স্থানেই যুদ্ধের স্মৃতি রয়েছে, গণহত্যার বধ্যভূমি রয়েছে। কালিকাপুরের মাদবর বাড়ির গণকবর। ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল এখানে ১৯ বাঙালি নারী-পুরুষকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।

“শহরের পুরাতন জেলখানার ভিতরে গণকবর করে সহস্রাধিক মানুষের লাশ পুঁতে রাখা হয়। জেলা প্রশাসকের বাংলোর দক্ষিণ পাশে সাতজন আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে পাক সেনারা। এগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।”

আরও পড়ুন