গোবিন্দগঞ্জে শিশুর বস্তাবন্দি লাশ: ‘ধর্ষণের পর হত্যা’

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় বস্তাবন্দি উদ্ধার হওয়া সেই শিশুটিকে `ধর্ষণের‘ পর হত্যা করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2022, 05:24 PM
Updated : 3 March 2022, 05:24 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই ঘটনার বর্ণনা দেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

গোবিন্দগঞ্জের বড় সাতাইল বাতাইল জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও ওই মসজিদের মক্তবের আরবির শিক্ষক মো. মোরসালিনের স্বীকারোক্তির বরাতে এই তথ্য তুলে ধরেন এসপি তৌহিদুল।

২৬ ফেব্রুয়ারি এই মক্তবের ১২ বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থী নিখোঁজ হন। পরদিন তার বস্তাবন্দি মরদেহ পাওয়া যায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, মো. মোরসালিন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বড় সাতাইল বাতাইল জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও ওই মসজিদের মক্তবের আরবির শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মসজিদ সংলগ্ন একটি কক্ষে থাকতেন।

এসপি বলেন, গত শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মোরসালিন ওই শিশুসহ আরও দুই শিশুকে মসজিদের মক্তব পড়ান। পড়া শেষে মোরসালিন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধনকুঠি এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়িতে আরবি পড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে রাস্তায় ওই শিশুর সঙ্গে তার দেখা হয়।

“মোরসালিন শিশুটিকে মসজিদ সংলগ্ন তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তার গলা টিপে ধরেন। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি নিস্তেজ হলে মোরসালিন তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর মেয়েটির পরনের হিজাব দিয়ে গলা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করেন।“

মোরসালিনের স্বীকারোক্তিতে এসপি আরও বলেন, লাশ গুম করতে মোরসালিন মেয়েটির মরদেহ সিমেন্টের খালি বস্তায় ঢুকিয়ে বাইসাইকেলের পিছনে ক্যারিয়ারে বেঁধে দুই কিলোমিটার দূরে বর্ধনকুঠি এলাকায় একটি সরোবরে ফেলে দিয়ে আসেন।

পরদিন [২৭ ফেব্রুয়ারি] দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় ওই মেয়েটির মামা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার জানান, পরে গাইবান্ধা গোয়েন্দা (ডিবি) ও গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. মোরসালিনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে মোরসালিনসহ তিন জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মোরসালিন ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন। গ্রেপ্তার অন্যদের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।

এসপি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বাইসাইকেলে শিশুটির মরদেহ বর্ধনকুঠি এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকানে লাগানো সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে।

এজন্য প্রেস ব্রিফিং শেষে ওই দোকানের মালিককে তিনি পুরস্কার দেন বলে জানান।  

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) আবু লাইচ মো. ইলিয়াচ, সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) উদয় কুমার সাহা, জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) নুর আলম সিদ্দিক, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি মাহবুবুল আলম ও এসআই নওশাদ আলী, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি ইজার উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।