জেলার কাহালু থানার ওসি আম্বার হোসেন জানান, দেড় বছর বয়সী শিশুটিকে হত্যার অভিযোগ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় থানায় এসেছেন তার স্বজনরা।
নিহত সাবা মনি জেলার কাহালু উপজেলার দামাই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে।
জাহাঙ্গীর জানান, গত শুক্রবার তার বড় মেয়ে জেরিন (৯) ও ছোট মেয়ে সাবা প্রতিবেশী হাফিজার রহমানের বরইগাছের নিচে বরই কুড়াতে যায়।
“পরে হাফিজার রহমানের কাছে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি জেরিন অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে আর সাবা মারা গেছে। মেয়ের মৃত্যু দেখে আমিও জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।”
ঘটনাটাকে জিনের কাণ্ড বলে প্রচার চালানো হয় এলাকায়।
পুলিশকে না জানিয়ে সাবার লাশ দাফন করা হয়।
আর জেরিনকে বগুড়া শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সবার খালু মান্নান মিয়া বলেন, “ঘটনার তিন দিন পর সোমবার জেরিনের জ্ঞান ফিরলে সে জানায়, তার চাচা রেজওয়ান লাঠি দিয়ে আঘাত করে সাবাকে মেরে ফেলেছে। জেরিন এগিয়ে গেলে তাকেও লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সে জ্ঞান হারায়।
“সাবার দাফনের সময় আমরা রেজওয়ানকে পাইনি।”
জমির বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার অভিযোগ।
মান্নান বলেন, “ভূতের কাণ্ড বলে প্রচার চালানোর পাশাপাশি আবদুল আলিম নামে এক হুজুরের কাছ থেকে একটি কাগজ নিয়ে এসেছেন রেজওয়ানের ভাই নূরুল ইসলাম। সেই কাগজে লেখা আছে, বদমেজাজি জিন সাবাকে হত্যা করেছে। ওই জিন থেকে বাঁচতে হলে পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা লাগবে।”
আবদুল আলিম এলাকায় ‘লাখো দাওয়া এক দোয়া চিকিৎসালয়’ নামে একটি দোকান চালান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নুরুল ইসলাম আমার কাছে আসার পর তার কথা শুনে বুঝতে পারি ওটা বদ জিন। আমি তাকে আমার প্যাডে লিখে দিই, বদ জিনকে বন্দি করতে পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা লাগবে।”
মোবাইল ফোনে চেষ্টার পর বাড়িতে গিয়েও নুরুল ইসলাম ও তার ভাই রেজওয়ানকে পাওয়া যায়নি।
তাদের বড় ভাই রুহুল আমিন বলেন, “জিনই সাবাকে হত্যা করেছে। এখানে আমার ভাই জড়িত না।
“এর ১০ দিন আগে গ্রামে আতাউর নামে একজনকে গাছ কাটতে স্বপ্নে মানা করে জিন। কথা না শোনায় জিন তাকে হত্যা করে। আতাউরের মৃত্যুর মজলিসে খেয়ে ফেরার পথে সাবাকে হত্যা করে জিন। আমার ভাই রেজওয়ান এই হত্যার সঙ্গে জড়িত না। কবিরাজ আবদুল আলিমও জিনের কথা বলেছেন।”
অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি আম্বার হোসেন।