শাড়ি কিনতে গিয়ে ‘অপহৃত’, ‘মুক্তিপণ না পেয়ে’ ব্যবসায়ীকে হত্যা

নরসিংদীর মনোহরদীতে এক শাড়ি ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; যাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে।     

নরসিংদী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2022, 10:21 AM
Updated : 19 Feb 2022, 10:21 AM

নিহত মিঠু হোসেন (২৪) সিরাজগঞ্জ সদরের রায়পুর রেলওয়ে কলোনি এলাকার মুসলিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি অনলাইনে শাড়ির ব্যবসা করতেন।

মিঠু বুধবার ভোরে শাড়ি কেনার জন্য সিরাজগঞ্জ থেকে নরসিংদীতে যান। বৃহস্পতিবার রাতে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।  

মনোহরদী থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান, মনোহরদী উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগোলিয়াপাড়া এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মিঠুর লাশ তারা উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় মিঠুর বড় বোন মিনু আক্তার বাদী হয়ে মনোহরদী থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

মিনু ঘটনার বর্ণনায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত বুধবার ভোরে শাড়ি কেনার জন্য নরসিংদীর উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় তার ভাই। সন্ধ্যায় সে মায়ের মোবাইলে ফোন করে নরসিংদী পৌঁছেছে বলে জানান। ওইদিন রাত ৮টার দিকে আবারও ফোন দিয়ে মিঠু জানায় যে, কয়েকজন ব্যক্তি তাকে অপহরণ করেছে এবং এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।

এ সময় অপহরণকারীরা মিঠুকে মারধর করে তাদের দেওয়া মোবাইল নাম্বারে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলে। এ ঘটনার পর রাতেই সিরাজগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তারা।

তিনি বলেন, “পরে রাত ১১টার দিকে মিঠু ফোন করে মাকে আবার বলে যে, তোমরা তো টাকা দিতে পারলে না। অপহরণকারীরা মনে হয় আমাকে মেরে ফেলবে। কোন ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দিও। এ সময় অজ্ঞাত ব্যক্তি তার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে আমাকে বলে, যেহেতু টাকা দিতে পারসনি তাই তোর ভাইকে বাঁচিয়ে রাখতে পারছি না।

আগামীকাল তোর ভাইয়ের লাশ খোঁজে নিস। এ কথা বলে মিঠুর মোবাইল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে মিঠুর খোঁজে আমি, মা ও নানি নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওনা হই।”

এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তি মিঠুর মোবাইল থেকে আবার মুক্তিপণ দাবি করে জানিয়ে মিনু বলেন, “এ সময় তিনি মিঠুর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অপহরণকারী বলেন, আগে টাকা দেন তারপর ভাইয়ের সাথে কথা বলেন। একথা বলে আবারো মোবাইল বন্ধ করে দেওয়া হয়।”

এরপর বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জের পরিচিত এক সাংবাদিকের মাধ্যমে মনোহরদী উপজেলায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে মিঠুর মা ও বোন মনোহরদী থানায় যান। পরে পুলিশের মোবাইল ফোনে ছবি দেখে মিঠুর লাশ শনাক্ত করেন তারা।

মনোহরদী থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান, “ওই যুবকের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা অন্য কোন স্থানে মিঠুকে হত্যা করে লাশ এখানে ফেলে গেছে।”

লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে চেষ্টা চালনো হচ্ছে বলে জানান তিনি।