স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সাপটিকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান বনবিভাগ লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “সাপটি লম্বায় সাড়ে ১৩ ফুট, চওড়া প্রায় সাত ইঞ্চি এবং ওজন ৫৫ কেজি।”
এটি লাউয়াছড়া বনেরই অজগর জানিয়ে শহীদুল বলেন, “বনের পরিবেশ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ভালো। এই অজগরটির আকৃতি এটিই প্রমাণ করে।”
গত শুক্রবার সাপটিকে লাউয়াছড়া বনের পাশে জানকিছড়া এলাকার একটি লেবু বাগানে দেখা যায়। পরে এক চা শ্রমিক তার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
রোববার সাপটিকে পুনরায় চা বাগানে দেখা গেলে স্থানীয়রা সেটিকে বেঁধে রেখে বন বিভাগকে খবর দেন। রাতেই উদ্ধারকর্মীরা সাপটিকে নিয়ে শ্রীমঙ্গল জানকীছড়া রেসকিউ সেন্টারে রাখেন। এ সময় আরও দুটি ছোট অজগর উদ্ধার করেন তারা।
মঙ্গলবার বিকালে রেসকিউ সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সাপটি একপাশে কুণ্ডলি পাকিয়ে আছে। সাপটিকে দেখার জন্য অনেকে সেখানে ভিড় করছেন।
শ্রীমঙ্গলের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র জানান, বিশাল আকৃতির এই সাপটির ছবি প্রথম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরদিন তারা খবর পান শ্রীমঙ্গল জাগছড়ায় একটি সাপ বেঁধে রাখা হয়েছে।
সাপটিকে উদ্ধার করতে গিয়ে পাশে আরও দুটি অজগর পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
শ্যামল বলেন, “অনেক কষ্ট করে বেশ কয়েকজন মিলে সাপটিকে উদ্ধার করে লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। বন কর্মকর্তার নির্দেশে আগামী ৩ মার্চ বন্যপ্রাণী দিবসে এগুলোকে বনে অবমুক্ত করা হবে।”
“বনের পাশেই চা বাগান ও লোকালয়। প্রায় সময়ই অজগরসহ বিভিন্ন প্রাণী বন থেকে বেড়িয়ে পড়ে লোকালয়ে। এ সময় প্রাণীগুলো সংকটে পড়ে,” বলেন তিনি।
বন্যপ্রণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট-বড় অনেক অজগর উদ্ধার করেছেন। কিন্তু এতবড় অজগর কখনও দেখেননি।
সজল জানান, এর আগে দেশের কোথাও এত বড় সাপের দেখা মিলেছে বলে তার জানা নেই।
সাপটি দেখতে আসা লন্ডন প্রবাসী খায়রুল ইসলাম বলেন, “এতো বড় সাপ এই বনে আছে। তার মানে আমাদের বুঝতে হবে বনটি অনেক সমৃদ্ধ।”
বনটিকে রক্ষায় এর ভেতরে দর্শনার্থীসহ অনান্যদের প্রবেশ সীমিত করার কথা বলেন তিনি।