রুমায় গোলাগুলি, এক সেনা সদস্যসহ ৪ জন নিহত

বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্যদের গোলাগুলিতে এক সেনা সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবান্দরবান প্রতিনিধি ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2022, 05:22 AM
Updated : 3 Feb 2022, 04:15 PM

বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

নিহত সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজিওনের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার। এছাড়া ফিরোজ নামে একজন সৈনিক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ অভিযানে একটি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড গুলি, তিনটি ম্যাগাজিন, তিনটি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, চার জোড়া ইউনিফর্ম এবং ‘চাঁদাবাজির’ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করার কথাও জানানো হয়েছে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জেএসএসপন্থি সন্ত্রাসীদের একটি’ দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজি করতে যাচ্ছে খবর পেয়ে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি টহল দল ওই এলাকায় যায়।

“রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় টহল দলটি বথিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত টহল দলের উপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। সদা প্রস্তুত সেনা টহল দলটির দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং সাহসী পাল্টা হামলায় জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বন্দুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হবার আলামত পাওয়া যায়।

“এ সময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পরেন এবং সৈনিক ফিরোজ নামে একজন সেনাসদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।”

আহত সৈনিক ফিরোজকে বৃহস্পতিবার সকালে রুমা থেকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

বান্দরবান সেনা রিজিওনের মেজর এরশাদ উল্লা বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনিও একজন সেনা সদস্য এবং জেএসএস এর তিনজন নিহতের খবর জানান।

তবে ওই তিনজনের নাম-পরিচয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়নি। জনসংহতি সমিতি ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি।

সংগঠনের সহ তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আইএসপিআরের প্রেসবিজ্ঞপ্তি এবং গণমাধ্যমের সংবাদে সেনাবাহিনীর সাথে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধ ‘সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের’ সাথে সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত উক্ত ঘটনার সাথে জনসংহতি সমিতি বা সমিতির কোনো সদস্য জড়িত নয়।

“জনসংহতি সমিতির কোনো ধরনের সশস্ত্র গ্রুপ থাকার প্রশ্নই ওঠে না। জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত। বস্তুত জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে নস্যাৎ করা এবং জনসংহতি সমিতির উপর দমন-পীড়নের হীনলক্ষ্যে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে উক্ত ঘটনার সাথে জনসংহতি সমিতিকে জড়িত করা হয়েছে বলে জনসংহতি সমিতি মনে করে।”