তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নেত্রকোণার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে সংস্কারকাজের ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে; এটা সন্তোষজনক।
হাওরাঞ্চলে একমাত্র ফসল এই বোরো ধান। বাঁধগুলো সয়মমতো সংস্কার করা না হলে আগাম বন্যায় অনেক সময় কৃষকের ধান তলিয়ে যায়। কৃষক তার ধান গোলায় তুলতে পারে না। ফসল হারিয়ে হাওরের ঘরে ঘরে দেখা দেয় খাদ্যাভাব, দুর্দিন।
নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার নাওটানা ও রসুলপুর এলাকায় ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ করছেন শ্রমিকরা। ছবি : লাভলু পাল চৌধুরী।
নেত্রকোণা পাউবো কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, হাওরের ফসল রক্ষায় ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ৩৬৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে গত ১৫ ডিসেম্বর ১৮৩ কিলোমিটার বাঁধের সংস্কারকাজে হাত দেয় পাউবো। পিআইসির মাধ্যমে এসব বাঁধ সংস্কারকাজ চলছে।
হাওরবেষ্টিত খালিয়াজুরী উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক আয়েন উদ্দিন।
একই উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক রমজান আলী অভিযোগ করে বলেন, “অনেক প্রকল্পের বান্ধে (বাঁধে) কিছুডা রাইখ্যা রাইখ্যা মাটি ফালাইতাছে। এইডার ঝুঁকি আছে।”
নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার নাওটানা ও রসুলপুর এলাকায় ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ করছেন শ্রমিকরা। ছবি : লাভলু পাল চৌধুরী।
নাওটানা গ্রামের কৃষক জহির আলী মনে করেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার কাজ একটু এগিয়েছে। তবে তা প্রয়োজনমত নয়।
এই কৃষক বলেন, “কিছু কিছু বান্ধে কাম আগাইছে; কতডিত নাই। এইবায় অইতো না। আরও তাড়াতাড়ি কাম করণ লাগব। আমরা আগাম বন্যার টেনশনে আছি। বন্যা আইলে বান্ধে ফিরায়। নাইলে সব তলায়া যায়গা। একটা মাত্র পসল, সবসময়ই বোরো নিয়া দুশ্চিন্তা হয়।”
কৃষক হাফিজ উদ্দিন বলেন, “এইডা বাটি এলাকা। এইহানের ফসল বান্ধের মধ্যেই টিকে। বান যদি তাড়াতাড়ি না হয় তাইলে পসল লইয়া যাইব বন্যায়। তাড়াতাড়ি বান্ধের কাম শেষ করণের দাবি করতাছি।“
“নির্ধারিত সময়েই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কৃষকদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। বরাদ্দের ১৪ কোটি টাকার মধ্যে সাত কোটি টাকা এরই মধ্যে পিআইসির দায়িত্বপ্রাপ্তদের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে”, যোগ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী।