সেদিন সন্তুষ্ট হব, যেদিন সাজা কার্যকর হবে: সিনহার বোন

কক্সবাজারের আলোচিত সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ে প্রধান দুই আসামির সর্বোচ্চ সাজা হলেও সাত আসামি খালাস পাওয়ায় পুরো প্রত্যাশা পূরণ হয়নি তার বড় বোন, এ মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2022, 11:38 AM
Updated : 31 Jan 2022, 03:46 PM

সোমবার রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, “সেদিনই আমরা সন্তুষ্ট হব, যেদিন সাজা কার্যকর হবে।”

করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয় সিনহা মো. রাশেদ খানকে।

তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর, যিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর একদল তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের পর বেরিয়ে আসে, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে কীভাবে বন্দুকযুদ্ধ সাজিয়ে খুন করে যাচ্ছিলেন টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

ভাই খুন হওয়ার পর ওসি প্রদীপ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয়জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন শারমিন। তদন্ত শেষে ১৫ জনের বিচার শুরু করে আদালত।

মা, দুই বোন আর ভাগ্নিদের সঙ্গে সিনহা রাশেদ খান। ছবি: পারিবারিক অ্যালবাম থেকে

সোমবার সেই মামলার রায়ে প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার দায়ে এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা এবং এএসআই সাগর দেব এবং পুলিশের তিন সোর্স নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে।

তবে এপিবিএন-এর এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও কনস্টেবল মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফ থানার পুলিশ সদস্য কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও মো. লিটন মিয়া বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

রায়ের পর আদালতে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিনহার বোন বলেন, “প্রথম থেকে আমরা ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছি। সেটা আজকে রায়ে দেখেছি, সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।

“তবে যে সাতজন একদম খালাস পেয়েছেন, তাদের কিছুটা সাজা হলেও দেওয়া যেত। কারণ ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা ছিল। সেটা হলে প্রত্যাশা বেশি পূরণ হত।”

সিনহার বোন বলেন, “আমরা সবসময় প্রত্যাশা করে এসেছি যে, প্রধান দুই আসামির যে বিষয়টা, এতই ওপেন জিনিসটা, এটা না হলে আমরা অবাক হতাম। এটা যে হয়েছে, আমরা বিজ্ঞ আদালতকে আসলে ধন্যবাদ জানাই, উনারা এত চুলচেরা বিশ্লেষণ করে রায়টি দিয়েছেন সেজন্য।”

সাতজনের খালাসের বিরুদ্ধে আপলি করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিচারের সাথে সংশ্লিষ্টদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ দিয়ে শারমিন বলেন, সবাই ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়, সেটা দেখা গেল আজকের রায়ে।

আরও পড়ুন