খুলনায় ‘ভুল চিকিৎসায়’ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

খুলনা নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ‘চিকিৎসকের ভুলে’ এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন তার স্বজনেরা।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 06:13 AM
Updated : 24 Jan 2022, 06:13 AM

তাদের দাবি, রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে রেখেই পালিয়েছেন এক চিকিৎসক। এ ঘটনায় হাসপাতালের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মৃত রোগীর নাম ইলিয়াস হোসেন ফকির (৩২)। তিনি খুলনার দাকোপ উপজেলার জয়নগর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান ফকিরের ছেলে।

খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর খানজাহান আলী হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।

“ভুল চিকিৎসায় ইলিয়াসের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করছিলেন স্বজনেরা। ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। উত্তেজনা ছড়ালে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সসহ অন্যান্য স্টাফরা পালিয়ে যান।”

পরে বিক্ষুব্ধ স্বজনদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় জানিয়ে ওসি বলেন, “এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ও একজন সেবিকাকে আটক করা হয়েছে।”

ইলিয়াসের স্ত্রী পারভীন বলেন, পাঁচ মাস আগে ইলিয়াসের হার্নিয়া হয়। শুরুতে তিনি এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ সেবন করেন। সুস্থ না হওয়ায় নগরীর মোহাম্মাদ নগরের ফার্মাসিস্ট মনিরের সঙ্গে কথা বলেন। তখন ইলিয়াসকে খানজাহান আলী হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করার পরামর্শ দেন মনির।

ডাক্তারদের পরামর্শে রোববার দুপুর ১টার দিকে বাড়ি থেকে খানজাহান আলী হাসপাতালে নেওয়া হয় ইলিয়াসকে। বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।

পারভীনের ভাষ্য, হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোস্তফা কামাল, ডা. মোর্শেদ ও ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মোহন অপারেশনের জন্য কক্ষে প্রবেশ করেন। কিছু সময় পর অপারেশন সফল হয়েছে বলে স্বজনদের জানানো হজয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ইলিয়াসের এক আত্মীয় গিয়ে দেখেন, রোগীর খিঁচুনি হচ্ছে, চোখ বড় বড় হয়ে গেছে।

“অবস্থা খারাপ দেখে আমাদের একজনকে ডেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক পালিয়ে যায়। পরে ইলিয়াসের মৃত্যু হয়।”

দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ইলিয়াসের বড় ভাই সোহরাব হোসেন বলেন, “ইলিয়াসের তিন সন্তান। এখন তাদের কি হবে? ভুল চিকিৎসায় আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে, আমরা আইনের আশ্রয় নেব।”

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেছেন, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তারা।