শাবিতে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের কুশপুতুল দাহ 

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মশাল মিছিলের পর তার কুশপুতুল দাহ করেছেন।  

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2022, 07:15 PM
Updated : 23 Jan 2022, 07:15 PM

রোববার রাত পৌনে ১০টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত তারা মশাল মিছিল করেন তারা। 

হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক থেকে ক্যাম্পাসের গোলচত্বর, চেতনা-৭১, ইউনিভার্সিটি সেন্টারের সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা 'এক দফা এক দাবি, ফরিদ তুই এখন যাবি', 'পতন পতন পতন চাই, ফরিদের পতন চাই', 'যেই ভিসি বোমা মারে, সেই ভিসি চাই না ' ইত্যাদি স্লোগান দেন।  

এরপর রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে মুক্তমঞ্চ ফরিদ উদ্দিনের কুশপুতুল দাহ করেন মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ উপস্থিত সকলের উদ্দেশে বলেন, "আমরা সবাই যাতে রাতে ক্যাম্পাসে থাকি। কেউ যাতে চলে না যাই। ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকব সবাই।"

তখন সবাই তার আহ্বানের প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করেন।    

রাজ বলেন, "আমরা ইতোমধ্যে ভিসির বাসভবনের বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বন্ধ করে দিয়েছি। আগামীকাল (সোমবার) আমরা সারাদিন ক্যাম্পাসে সবাই থাকব। কাল সবার জন্য তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা থাকবে।" 

এদিকে, রোববার দিনব্যাপী ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবনের দেয়াল দেয়ালে চিকামারা ও রোড পেইন্টিং করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।  

রোড পেইন্টিংয়ের কাজে রত একজন নাম না বলার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা চাই আমাদের আন্দোলন ক্যাম্পাসের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকুক। আমরা আমাদের দাবিতে অনড় ছিলাম, আছি, থাকব।  পিছপা হওয়ার সুযোগ এখন আর নেই।"

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।

ওই সময় তাদের তিনটি দাবির মধ্যে ছিল- প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, হলের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দ্রুত ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া।

১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

এরপর ওইদিন বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদ করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ। ধাওয়া-পাল্টার এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করেন, যা রোববার পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে।

আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় রোববার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন।