শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি বসবেন না শাবি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে চান না শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2022, 02:30 PM
Updated : 21 Jan 2022, 06:49 PM

তবে তারা ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনা করতে রাজি আছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা করলে শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত জানান।

শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ। তাই তাদের পক্ষে ঢাকায় যাওয়া সম্ভব নয়। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যদি তাদের দেখে যান, তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে তারা খুশি হবেন জানান।

তাছাড়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রী চাইলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনা করতে আগ্রহী বলে জানান।

আলোচনার জন্য তারা ইতোমধ্যেই একটা প্রতিনিধি দল গঠন করেছেন বলে জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শুক্রবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে পর্যালোচনা সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান। তাছাড়া দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

নাদেল শিক্ষার্থীদের বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী আপনাদের এখানে আসতে চাচ্ছেন। তবে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তিনি দুই-এক দিনের মধ্যে আসতে পারছেন না। কিন্তু তিনি আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী চান শিক্ষার্থীরা যতজন চায় তারা ঢাকায় আলোচনায় বসতে পারবেন।”

তার জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তার সবই প্রমানিত। তারা তাদের অসুস্থ অনশনরত ভাইবোনদের রেখে কিভাবে যেতে পারেন? তারা ঢাকায় না গিয়ে অনলাইনে আলোচনায় বসতে চান এবং শিক্ষামন্ত্রীকে তাদের পরিস্থিতি দেখতে আসার আহ্বান জানান।

এ সময় শফিউল আলম বলেন, “আসলে অনলাইনে তো সব বিষয়ে আলোচনা হয় না। সামনাসামনি অনেক বিষয় উঠে আসে। এজন্য তিনি (শিক্ষামন্ত্রী) সামনাসামনি বসতে চাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ঢাকায় যেতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সরাসরি কথা বললে বিষয়টি ভালোভাবে সমাধান হতো।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এর জেরে সোমবার পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন। সে ঘটনায় পুলিশ ‘গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ’এনে অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা অনশনে যান; ঘোষণা দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার।

অনশনের তৃতীয় দিনে ১২ জন অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নয়জন, জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইজন ও আখালিয়ায় মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে একজনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। অন্য আরও ১২ জন অনশনে রয়েছেন।