আগামী এক দিনের মধ্যে জেলা জজ ও বিচারিক হাকিম আদালতের কর্মচারীদের শাস্তির ব্যবস্থা না নিলে আইনজীবীরা বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে আইনজীবী সমিতিতে এক সভায় এ ঘোষণা দেন আইনজীবী নেতারা।
এদিকে, সিরাজগঞ্জ জেলা জজ, বিচারিক হাকিম আদালত ও শাহজাদপুর উপজেলা আদালত খোলা থাকলেও রোববার থেকে আইনজীবীরা না যাওয়ায় আদালতের কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দেয়। ভোগান্তির শিকার হন বিচারপ্রার্থীরা।
গত বৃহস্পতিবার বিচারিক হাকিম আদালতের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ করেন এক আইনজীবী। এ ঘটনায় আইনজীবীদের সঙ্গে আদালত কর্মচারীদের বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ পান্না বলেন, অতিরিক্ত ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী বহিরাগতদের নিয়ে আইনজীবী আবুল কালামকে তার চেম্বারে ঢুকে মারপিট করেছে। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য অফিস কক্ষসহ সকল এজলাসে তালা লাগিয়ে আপত্তিকর ব্যানার নিয়ে কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ করেছে আদালতের কর্মচারীরা।
এ ঘটনার বিচারের দাবিতে লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি জেলা ও দায়রা জজ এবং মুখ্য বিচারিক হাকিমকে অবগত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অভিযুক্ত কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে গত তিন দিন যাবত আমরা আদালত বর্জন অব্যাহত রেখেছি। কিন্ত আমরা এখনও কোনো বিচার পাইনি।”
তিনি আরও বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে আইনজীবী সমিতিতে সভা করা হয়েছে। সভার সিদ্বান্ত মোতাবেক বুধবার দুপুর ২টার পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং মুখ্য বিচারিক হাকিমকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিচার দিতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে বৃহত্তর কমসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ফারুক আহাম্মদ এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আব্দুর রহমানকে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন না ধরায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির ফোন ধরলেও তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত বৃহস্পতিবারের ঘটনায় আইনজীবী আবুল কালাম বাদী হয়ে ওইদিন রাতে বিচারিক হাকিম আদালতের স্টোনোগ্রাফার ইউসুফ আলীসহ বহিরাগত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এরপর রোববার সকালে জেলা জজ ও বিচারিক হাকিম আদালতের কর্মচারীরা আইনজীবীদের শাস্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে সভা-সমাবেশ করেন।
এ অবস্থার মধ্যে মারপিটের অভিযোগ এনে রোববার রাতে ১১ জন আইনজীবীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫/২০ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন বিচারিক হাকিম আদালতের স্টোনোগ্রাফার ইউসুফ আলী।