কিশোরগঞ্জে কাঠ দিয়ে ‘পরিবেশ বান্ধব’ গাড়ি বানালেন দুই ভাই

কিশোরগঞ্জের দুই ভাই বিদ্যুৎ-চালিত কাঠের গাড়ি বানিয়ে সাড়া ফেলেছেন; যে গাড়ি পরিবেশবান্ধব এবং দামেও সাশ্রয়ী বলে তাদের দাবি।

মারুফ আহমেদ কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2022, 11:31 AM
Updated : 18 Jan 2022, 02:18 PM

জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের এই দুই ভাই জিপের মতো গাড়িটি নিয়ে সম্প্রতি রাস্তায় বের হলে তার ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

দুই ভাইয়ের মধ্যে এনামুল হক বুলবুল স্থানীয় দোকানে সোলার প্যানেল ও আসবাবপত্র বিক্রি করেন। আর ছোট ভাই ইমরানুল হক উপজেলার চরপাকুন্দিয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

বুলবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের এ গাড়ি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার গতিতে চলে। তারা এখানে ১৫০০ এমপিআর ব্যাটারি ব্যবহার করেছেন। ব্যাটারি চার্জে খরচ হয় ১৫ টাকার মতো।

“তাছাড়া গাড়িটি সৌরবিদ্যুতেও চলবে। একবার পূর্ণ চার্জে চলে একটানা একশ কিলোমিটার পর্যন্ত।”

চার আসনের গাড়িটি তৈরি করতে তাদের প্রায় তিন মাস লেগেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে তাদের ব্যয় হয়েছে দেড় লাখ টাকার মতো।

এমন গাড়ির উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অনেক মানুষের গাড়ি কেনার ইচ্ছা আছে। কিন্তু গাড়ি কিনতে অনেক টাকা লাগে। যে কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাদের কথা মাথায় নিয়ে আমি চিন্তা করি কিভাবে কম দামে গাড়ি তৈরি করা যায়।

“সেই চিন্তা থেকে আমার ছোট ভাইকে নিয়ে তিন মাসের মধ্যে কাঠ দিয়ে পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি তৈরি করি।”

‘পরিবেশবান্ধব’ এবং ‘দাম কম’ হওয়ায় আগ্রহ দেখান ছোট ভাই স্কুলশিক্ষক ইমরানুল হক।

ইমরানুল বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করায় গাড়িটি পরিবেশবান্ধব। তাছাড়া গাড়িটি স্বল্পমূল্যে কেনা যাবে।

গাড়িটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, “আমাদের এলাকায় কাঠের জিপগাড়ি তৈরির খবরে আমি খুব আনন্দিত ও গর্বিত অনুভব করছি।

“কিন্তু নির্মাতা দুই ভাই আর্থিক সমস্যার কারণে গাড়িটি বাজারজাত করতে পারছে না। গাড়িটি বাজারজাত করতে আমি সরকারি সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুররোধ জানাই।”

গড়িটি বাজারজাত হোক সেই আশা করেন এলাকারও অনেকে।

পোড়াবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল মামুন বলেন, “গাড়িটিতে আমি চড়েছি। যেহেতু স্বল্প মূল্যে পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি কেনা যাবে, তাই এটি খুব ভালো একটি উদ্যোগ।

“গাড়িটি বাজারজাতকরণে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত।”