সোমবার রাত সাড়ে দশটায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভরত সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ চিঠি পাঠ করেছেন আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী। তারা এই চিঠি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনের সামনে ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ‘বিনা উস্কানিতে সুপরিকল্পিতভাবে’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশের হামলার অভিযোগ করা হয়।
এতে অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ২০ এর বেশি গুরুতর আহত হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের উপর এমন হামলা চালানোর মাধ্যমে উপাচার্য দায়িত্ব পালনের নৈতিক, যৌক্তিক ও সাংবিধানিক যোগ্যতা হারিয়েছেন উল্লেখ করে তাকে অপসারণের আবেদন জানানো হয় চিঠিতে।
চিঠিতে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ করা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ে গতদিনের হামলার পর আজ [সোমবার] সারাদিন ক্যাম্পাসে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে জলকামান ও রায়টকারসহ পুলিশের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি করেছে।”
তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য আচার্যের কাছে অবিলম্বে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান।
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ তুলে হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের চতুর্থ দিন রোববার তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
ওই সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অর্ধশত আহত হন।
কিন্তু ওই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে রাতেই উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে পুরো ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করেন আন্দোলকারীরা। মিছিল শেষে বেলা ১১টার দিকে মুক্তমঞ্চে জমায়েত হন তারা।
দুপুর ১২টার আগে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় ওই সমাবেশ থেকে। সেখানে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা হলেই অবস্থান করবেন এবং প্রতিটি হলের প্রভোস্টের অফিসের তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন