‘বাগেরহাটে সংক্রমণের হার বাড়ছে, নমুনা পরীক্ষায় অনীহা’

বাগেরহাটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০টি নমুনা পরীক্ষায় চারজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ৪০ শতাংশ। তবে এ সময় কেউ কোভিডে মারা যায়নি।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2022, 01:09 PM
Updated : 17 Jan 2022, 01:09 PM

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তের এ তথ্য জানিয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাগেরহাটে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়লেও নমুনা পরীক্ষায় মানুষের আগ্রহ কম।

“জেলার হাসপাতালগুলোতে নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও প্রতিদিন আট থেকে দশটির বেশি নমুনা পাচ্ছি না। যা পরীক্ষা হচ্ছে তাতেই সংক্রমিত রোগী কম নয়। ১০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত শনাক্তের হার ওঠানামা করছে।”

তিনি বলেন, অনেকের শরীরের করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও তারা নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে ওই সন্দেহভাজন রোগীর মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভবনা থেকেই যাচ্ছে।

অবহেলা না করে করোনা পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, বাগেরহাট জেলার ১৭ লাখ ৪৪ হাজার জনসংখ্যার মধ্যে ১২ লাখ ২১ হাজার জনকে কোভিড টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার ৮ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৫ জন টিকার জন্য নিবন্ধন করে।

“জেলার ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫৩ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৩৮ দশমিক ১৮ শতাংশ মানুষ। মার্চ মাসের মধ্যে জেলার ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে স্বাস্থ্য বিভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”

বাগেরহাট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আহাদ হায়দার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাগেরহাটের হাটবাজার, বিপণিবিতানসহ জনসমাগমস্থলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এখন সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর বাগেরহাটের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছিল। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিগত দিনগুলোতে বাগেরহাটে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা দেশের মধ্যে ‘পাইওনিয়ার’ হয়ে আছে।

“সম্প্রতি করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ডেল্টার থেকে এর সংক্রমণের হার পাঁচগুণ বেশি। তাই আমাদের এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে। মাস্ক ছাড়া অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজারে কেউ আসলে তাকে সেবা দেওয়া যাবে না। সবক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে।”

টিকার সংকট নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যারা টিকা পাওয়ার যোগ্য তাদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

সবাইকে টিকার আওতায় আনা গেলে সংক্রমণ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।