অবরুদ্ধ শাবি উপাচার্যকে উদ্ধারে পুলিশের লাঠিপেটা, আহত অর্ধশত  

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করার পর লাঠিপেটা করে পুলিশ উদ্ধার করেছে। এ সময় অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছে।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2022, 03:12 PM
Updated : 16 Jan 2022, 03:39 PM

রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। রোববার চতুর্থ দিনের মতো তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকে।  

সরেজমিনে জানা গেছে, রোববারও ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে গোলচত্বরের পাশে এক কিলোমিটার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে যানবাহন চলাচলও করতে বাধা দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

দুপুর আড়াইটার দিকে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষ করে উপাচার্য রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের হয়ে বাসভবনে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীরা তাকে ওয়াজেদ মিয়া আিইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন।

বিকাল ৪টার দিকে উপাচার্যকে মুক্ত করতে আইসিটি ভবনের সামনে পুলিশ উপস্থিত হয়। এসময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাইসহ’ নানা ধরনের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশের উপর উত্তেজিত হয়। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

ক্যাম্পাসে শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে প্রক্টরকে ফোন করে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন ওই হলের ছাত্রীরা।

এ সময় উপাচার্য বাসভবন থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান।

শুক্রবার উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার পর সমাধান না পেয়ে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে হলের পানি, সিট, ইন্টারনেট সংযোগ, খাবারসহ বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনার পর ছাত্রীরা হল প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদকে ফোন করে সমস্যার কথা জানান এবং অল্প সময়ের জন্য হলে আসার অনুরোধ করেন। এ সময় প্রভোস্ট হলে আসতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করেন।

আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার বেলা ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে তিন দফা দাবি লিখিতভাবে জমা দেন ছাত্রীরা।

দাবিগুলো হল- প্রভোস্ট কমিটিকে পদত্যাগ করতে হবে, হলের সব ধরনের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং অবিলম্বে ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট নিয়োগ দিতে হবে।

ছাত্রীদের আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে জোবেদা কনক খানকে ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওইদিন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় এই হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজাকে ছুটিতে পাঠিয়ে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: