পৌষ শেষে এবারও কালীগঞ্জে বসল মাছের মেলা

বরাবরের মতো এবছরও পৌষের শেষ দিন গাজীপুরের কালীগঞ্জে বসেছে মাছের মেলা।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2022, 06:15 PM
Updated : 14 Jan 2022, 06:15 PM

নামে মাছের মেলা হলেও এখানে বস্ত্র, হস্তশিল্প, চারু-কারু, প্রসাধনী, ফার্নিচার, খেলনা, তৈজসপত্র, মিষ্টি ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যের দোকানও বসে।  

পৌষের শেষ দিন শুক্রবার উপজেলার বিনিরাইলে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে দিনভর চলে এই মেলা।

বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজারের বেশি দোকানে মাছের পসরা সাজিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট-বড় আকারের মাছ নিয়ে এসছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে সামুদ্রিক চিতল, বাঘাইড়, আইড়, বোয়াল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইকলা, রূপচাঁদা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশি মাছ।

উৎসবের আমেজে মেলা থেকে সাধ্য অনুযায়ী মাছ কিনে জামাইরা শ্বশুরবাড়ি যান।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, ৩০/৪০ কেজি ওজনের মাছের দোকানে ক্রেতাদের বেশি ভিড় দেখা গেছে। ৪০ কেজির সবচেয়ে বড় বাঘাইড়ের দাম হেঁকেছেন ৬৫ হাজার টাকা। এক ক্রেতা ৪৫ হাজার টাকা পযন্ত উঠেছিলেন মাছটি কিনতে।

মেলায় আসা শ্রীপুর উপজেলার লিটন দাস বলেন, তিনি কালীগঞ্জের জামালপুর গ্রামের জামাই। প্রতিবছরই তিনি এ মেলায় যান। এবার তিনি শ্বশুরবাড়িতে নেওয়ার জন্য সাড়ে ১৯ হাজার টাকার চিতল ও আইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনেছেন।

আয়োজকরা জানান, মেলায় গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। মাছের সঙ্গে মেলায় আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি, বস্ত্র, হস্ত ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যের হাট বসে।

মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও জামালপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কিশোর আকন্দ জানান, ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা বিনিরাইলের এই মাছের মেলা এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। প্রতিবছর পৌষের শেষ দিনে এ মেলা বসে। এ মেলা কালীগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত।

এ মেলাকে কেন্দ্র করে বস্ত্র, হস্তশিল্প, চারু-কারু, প্রসাধনী, ফার্নিচার, খেলনা, তৈজসপত্র, মিষ্টি ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যের দোকান বসে।

কয়েকদিন আগে থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এলাকায় পৌঁছে যান মেলায় অংশ নিতে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আস সাদিক জামান জানান, মেলার আয়োজনে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তিনি মেলায় স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানান।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, “মানুষের মধ্যে করোনা ও ওমিক্রনের কোনো ভয় নেই। মাস্ক পরার ব্যাপারে সতর্ক করা হলেও মানুষ তা ব্যবহার না। তারা স্বাস্থ্য বিধি না মানলে আমরা কি করব।”