ভোটের আগে ‘বহিরাগতদের’ আনা হচ্ছে, অভিযোগ তৈমুরের

ভোট ‘প্রভাবিত’ করতে বাইরের জেলা থেকে ‘সরকারি দলের লোকজনকে’ নারায়ণগঞ্জে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকার লাগোয়া এই সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2022, 10:49 AM
Updated : 14 Jan 2022, 10:49 AM

নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন শুক্রবার শহরের মিশনপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। 

বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া এই স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, “নির্বাচনের দিন যাতে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে, বিভিন্ন জেলা থেকে যে লোকজন আনা হচ্ছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য, তারা যেন নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে যায়- এ ব্যাপারে আপনারা একটি নির্দেশনা জারি করুন।“

তৈমুর দাবি করেন, “নারায়ণগঞ্জের হোটেলগুলোতে বিভিন্ন জেলার সরকারি দলের লোকজনদের এনে রাখা হয়েছে। সার্কিট হাউজ, ডাকবাংলোকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

”আইন অনুযায়ী, সরকার গাড়ি ও সরকারি ডাকবাংলো ব্যবহার করার বিধান নেই। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। তারপরও এই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই সরকারি দলের উচ্চপর্যায়ের মেহমানরা আমাদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উঠেপড়ে লেগেছেন।”

নারায়ণগঞ্জের ভোটারদের উৎসবমুখর পরিবেশে, সুষ্ঠু ভোটে নিজেদের মতামত জানানোর সুযোগ দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আগামী রোববারের ভোটে তৈমুরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী টানা দুই বারের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। নৌকার প্রার্থীর হয়ে নারায়ণগঞ্জে প্রচার চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অন্যরা।

নির্বাচনী প্রচার শেষের আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের দপ্তরে যান আওয়ামী লীগের নেতারা। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ও পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন তারা; যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তৈমুর।

যদিও বৈঠক শেষে নানক বলেছেন, “এসেছিলাম জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়কে এ কথাটা বলার জন্য যে, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। এর আগেও আমরা বারবার এসেছিলাম।”

সেই বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তৈমুর বলেন, “ডিসি-এসপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকে জনমনে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জের জনগণ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।”

তিনি বলেন, “ঢাকার মেহমান নানক তার কিছু সঙ্গী নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু তার বক্তব্য ও দেখা করতে যাওয়ার সঙ্গে কোনো সমন্বয় নেই। প্রথমত তিনি নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। তিনি নারায়ণগঞ্জের নাগরিকও না। এটা আমি অন্যায় মনে করি। উচ্চপর্যায়ের সম্মানিত একজন নেতার কাছ থেকে আমরা এটা প্রত্যাশা করি না।”

হাতি মার্কার প্রার্থী তৈমুর কয়েকদিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন যে, তার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশি তল্লাশি ও হয়রানি করছে; মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে।

গ্রেপ্তার এড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছেন জানিয়ে তৈমুর এদিন অভিযোগ করেন, “সিদ্ধিরগঞ্জের নির্বাচনী সমন্বয়ক মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ এজেন্ট দেওয়ার কাগজপত্র ও নথি গায়েব করেছে।”

ভোটের দিন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য তিনি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান। 

নিজের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তৈমুর বলেন, ৫০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দেখে এবং গত ১৮ বছরের সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বের প্রতি মানুষের ‘ক্ষোভের কারণে’ ভোটাররা তাকেই নির্বাচিত করবেন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আব্দুস সবুর সেন্টু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।