দুধ, গোলাপজলে কার্যালয় ধুয়ে দায়িত্ব নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

দুধ ও গোলাপজল দিয়ে ধুয়ে কার্যালয়কে ‘পবিত্র’ করে চেয়ারে বসেছেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রজব আলী বাবলু।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2022, 07:48 AM
Updated : 13 Jan 2022, 07:48 AM

মঙ্গলবার এ ঘটনা এলাকার শত শত মানুষ প্রত্যক্ষ করে। কেউ কেউ ছবি তুলে, ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এতে এ ঘটনা ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করে।

গত ২৮ নভেম্বরের দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রজব আলী বাবলু দুইবারের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তারা আপন ভায়রা। রোববার তিনি শপথ নেন।

বুধবার পরিষদ কার্যালয়ে মিলাদ পড়িয়ে, ফিতা কেটে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রজব আলী বাবলু। তবে এ সময় সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তার কাছে গিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সেরে আসেন।

দুধ, গোলাপজল দিয়ে কার্যালয় ধুয়ার ব্যাপারে চেয়ারম্যান রজব আলী বাবলু বলেন, “এই পরিষদে আগে অনেক অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তাই পরিষদকে পবিত্র করতে আমার কর্মী-সমর্থকদের পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে বলেছিলাম। তারা উৎসাহী হয়ে আনন্দ করে দুধ ও গোলাপজল দিয়ে ধুয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, ”বুধবার সকালে প্রথম পরিষদে যাওয়ার আগে আমি সেখানে ক্বারি দিয়ে মিলাদ পড়িয়ে, আল্লাহর নাম নিয়ে প্রথম কর্মদিবস শুরু করেছি। যেহেতু আমি মুসলমান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। তাই পরিষদকে পবিত্র করে নতুনভাবে শুরু করেছি। আশা করছি, এখন থেকে এই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কোনো অনৈতিক বা খারাপ কাজ হবে না।”

তবে বর্তমান চেয়ারম্যানের এই ধরনের আচরণে ক্ষুব্ধ সাবেক চেয়ারর‌্যান। তিনি এতে ‘নিচু মানসিকতা‘র কাজ বলে বর্ণনা করেছেন।

সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “দায়িত্ব গ্রহণ করার অনুষ্ঠানে তিনি (রজব আলী বাবলু) আমাকে ডাকেননি। সচিব এসে স্বাক্ষর করে নিয়ে গেছে। শুনলাম, আমি নাকি খারাপ মানুষ ছিলাম, পরিষদে খারাপ কাজ হতো, তাই দুধ আর গোলাপজল দিয়ে ধুয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। দুইবার হেরে এবার জিতেছেন। তাই আনন্দে গদগদ হয়ে এটা করেছেন তিনি। এটা নিচু মানসিকতার পরিচয়।”

তিনি আরো বলেন, “আমিও দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি কখনও অতীত চেয়ারম্যানদের অসম্মান করিনি। ওই পরিষদের জমি আমার আর সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেনের দেওয়া। নতুন ভবন নির্মাণ, রঙ করা ও ফার্নিচার সব আমার হাতে করা। সেখানে আমি খারাপ কাজ করব এমন প্রশ্নই ওঠে না। বর্তমান চেয়ারম্যানও সারাজীবন থাকবেন না। একদিন যেতে হবে।”