বার বার শামীম ওসমানের কথা কেন, প্রশ্ন আইভীর

ভোটের প্রচারের মধ্যে শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রশ্ন শুনে নিজের অসন্তোষ ঝাড়লেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2022, 11:05 AM
Updated : 12 Jan 2022, 11:09 AM

তিনি বলেন, “এই কথা শুনতে শুনতে আমি তিন দিন যাবত হয়রান হয়ে গেছি। আপনারা আমাকে মাঠে কাজ করতে দিচ্ছেন না। আমার যারা নেতাকর্মী মাঠে কাজ করছে, তাদের কথা জিজ্ঞেস করছেন না। একজনকে কেন বার বার টেনে নিয়ে আসেন আপনারা।

“উনি (শামীম ওসমান) তো নৌকার লোক, নৌকার বাইরে কোথায় যাবেন?”

ভোটের চার দিন আগে বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের টানবাজার এলাকায় গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইভীর এই প্রতিক্রিয়া আসে। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, শামীম ওসমানের অনুসারীদের সমর্থন তিনি পাচ্ছেন কি না?

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের সঙ্গে মেয়র আইভীর বিরোধ দীর্ঘদিনের।

এক দশক আগে দলের নেতা শামীমকে হারিয়েই প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন আইভী। তখন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হত না। আইন সংশোধনের পর এখন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে স্থানীয় সরকারের এই ভোট।

আগের বারের মতো এবারও আইভী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। প্রচারের সময় শামীমের বিরুদ্ধে কথাও বলেছেন তিনি। অন্যদিকে শামীম দুদিন আগে নৌকার পক্ষে প্রচারে নামার ঘোষণা দেন।

এই নির্বাচনে আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার। বিএনপি ভোটে অংশ না নেওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে হাতি প্রতীকে লড়ছেন।

মেয়র নির্বাচনে টানা তৃতীয়বার জয়ের আশা প্রকাশ করে আইভী বলেন, “হাতি তো বনে থাকে, হাতি শহরে থাকে না। বনের হাতি বনেই চলে যাবে, নৌকা মার্কা জিতে যাবে।”

নেতাকর্মীদের হয়রানি, গ্রেপ্তার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশির বিষয়ে তৈমুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বলেন, “আমি বিষয়টি ঠিক জানি না। আমি শুধু গত তিন-চার দিন আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে একজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি শুনেছিলাম।

“আমার তরফ থেকে এই ধরনের কোনো কিছু ছিল না। সুতরাং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শহরের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য যদি কোনো মাদকাসক্ত, সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের কাউকে ধরে থাকে, তাহলে তারা সঠিক কাজই করেছেন।”

মানুষ যাতে ভোট দিতে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান নৌকার প্রার্থী আইভী।

নির্বাচনে টাকা ছড়াছড়ির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, “দেশের মানুষ জানে আমি গরিব। আমি নরমাল লাইফ লিড করি। এটা আমার শত্রুও জানে, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কাকা তৈমুর আলম খন্দকারও জানেন। আমি কখনও টাকার রাজনীতি করিনি, করবও না।

“সুতরাং টাকা কোথায় থেকে ছড়াচ্ছে, কারা ছড়াচ্ছে- এটা আমারও প্রশাসনের কাছে জিজ্ঞাসা। কেন তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না?”

আগের দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আইভী বলেন, “২০১১ সালে খুব সুন্দর নির্বাচন হয়েছিল। ওই সময় সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রশাসন যদি সাহায্য না করত, তাহলে আমি মেয়র হতে পারতাম না।

২০১৬ সালেও বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাখাওয়াতের সঙ্গে নির্বাচন করেছি। সেসময়ও অসম্ভব সুন্দর পরিবেশে উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ ভোট দিয়েছে। আগামী ১৬ তারিখেও মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে।”