বুধবার সকালে ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত সংযোগ সড়কেরও উদ্বোধন করেন তিনি।
রাঙামাটির দুর্গম তিন উপজেলার মানুষ চেঙ্গি নদীর উপর একটি সেতুর দাবি জানিয়ে আসছিল ছয় দশক ধরে। তাদের সেই স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন বিকাশের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হল বলে কর্মকর্তাদের বিশ্বাস।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের ২০ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) ৫০০ মিটার দীর্ঘ এ সেতু নিমার্ণ করেছে। এপ্রোচ সড়কসহ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২৭ কোটি টাকা।
সেতুর উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘতম এই সেতু নির্মাণের ফলে শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন আরও একধাপ এগোলো। এতে স্থানীয়দের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ সহজ হবে।
“আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি করা হয়েছিল। এখনও শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।”
রাঙামাটি সদর-নানিয়ারচর-লংগদু-বাঘাইছড়ি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৯৩ সালে নানিয়ারচর অংশে চেঙ্গী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এখানে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।
দুই বছর পর ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেতু নির্মাণ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ইসিবি। এর কার্যাদেশ পায় ঠিকাদার কোম্পানি মনিকো লিমিটেড।
সেতুটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উচ্ছ্বাস রয়েছে। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় তারা খুশি। তবে এখনই এই সেতুর সুবিধা পুরোপুরি পাচ্ছে না লংগদু ও বাঘাইছড়ির মানুষ, কারণ নানিয়ারচর থেকে লংগদু উপজেলায় যাতায়াতের ১৮ কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি সড়ক এখনও নির্মাণ হয়নি। সেটি নির্মাণ হলেই লংগদুর সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
সেতুটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিও কনফারেন্সে নানিয়ারচর থেকে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্য ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রমুখ।