নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর বলেন ‘যে কোনো পরিস্থিতিতে’ নির্বাচনের মাঠে ‘টিকে থাকতে‘ লড়বেন তিনি।
বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত তৈমুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বর্তমান মেয়র।
কয়েক দিন আগে আইভীর পক্ষে প্রচারে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে তৈমুর বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক আমাকে ‘ঘুঁঘুর ফাঁদ’ দেখাবেন বলেছিলেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিএনপির নেতাকর্মী ও আমার সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা শুরু হয়েছে। তার বক্তব্যের পর থেকে ঘুঘু ও ঘুঘুর ফাঁদ দেখা শুরু করেছি।”
এখানে ‘ঘুঘুর ফাঁদ’ দেখানোর যে কথা বলা হয়েছে, এটি যদি তার প্রতিফলন হয়ে থাকে, তাহলে সবচেয়ে বেশি প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ‘ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ বলেও মন্তব্য করেন তৈমুর।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হয়ত বিষয়টি জানেন না, অতি উৎসাহী হয়ে কেউ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম-অত্যাচার চালাচ্ছেন। এমনিতেই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আর্ন্তজাতিক মহলে নানা প্রশ্ন রয়েছে।”
তৈমুর অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ দেওয়া হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তৈমুর সংবাদ সম্মেলনে নিজের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একজন সমন্বয়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানান এবং তার মুক্তি দাবি করেন।
রবির স্ত্রী রেশমী আক্তারও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলের বাসা থেকে রবিকে পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রবিকে আগে গ্রেপ্তার করা হলো না কেন- এমন প্রশ্ন রেখে তৈমুর বলেন, “আমি যেদিন মনোনয়নপত্র কিনেছিলাম সেদিন তিনি পাশে ছিলেন। যেদিন জমা দিই সেদিনও তিনি ছিলেন, যেদিন বাছাই হয় সেদিনও রবি পাশে ছিলেন। মার্কার দিনও তারা আমার সঙ্গে ছিল। তখন তো তাকে গ্রেপ্তার করা হয় নাই।”
তৈমুর দাবি করেন, সোমবার রাতেও তার ৩৭ নেতাকর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে এবং ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
“রাতে পোশাকে, সাদা পোশাকে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চলছে। বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর থানায় যোগাযোগ করলে জানানো হয়, তারা কিছু জানেন না।”
জেলার পুলিশ সুপারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি যদি এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেন, গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ না করেন, তাহলে আপনার অফিসের সামনে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বসে পড়ে ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। সেখানে থেকেই নির্বাচন পরিচালনা করা হবে।”
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তৈমুর বলেন, “জনগণ যে রায় দেবে, সেই রায় আমরা মাথা পেতে নেব এবং জনগণের রায়ই চূড়ান্ত রায়।”
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার দলে কোনো বিভাজন নেই। বরং সরকারি দলের বিভাজন প্রকাশ্য।”
সংবাদ সম্মেলন শেষে তৈমুর আলম বন্দরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ শুরু করতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল।