ভোটের পরে নওগাঁয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে ‘অগ্নিসংযোগ’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটের পরে নওগাঁয় এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে।

নওগাঁ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2022, 12:23 PM
Updated : 8 Jan 2022, 12:23 PM

তাছাড়া ভোটের দিন পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের মামলার পর জেলার পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের কমলাবাড়ি গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন নারী ও শিশুরা।

বুধবার ভোট শেষে সন্ধ্যায় ওই ইউনিয়নে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হামলা হয়। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা পারভীনসহ ১১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও আড়াই হাজার মানুষকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। মামলায় ফারজানাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ফারজানার জামাতা আতিকুর রহমান রাসেল বলেন, নির্বাচনী বিরোধের জেরে নৌকার প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক ও তার লোকজন শুক্রবার রাতে তার শাশুড়ির বাড়িতে আগুন দিলে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ে।

তিনি অভিযোগ করেন, তার শাশুড়ির কমলাবাড়ি গ্রামের বাড়িতে আগুন দিয়ে গাড়ির গ্যারেজ, গুদাম, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালপত্র ও খড়ের পালা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

পরে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১টার দিকে পত্নীতলা ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান পত্নীতলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার রাইহান ইসলাম শিহাব।

তবে কীভাবে আগুন লাগে সে সর্ম্পকে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ফারজানার জামাতা আতিকুর রহমান রাসেল।

পত্নীতলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের কথা শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাসহ সাবির্ক পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।

এদিকে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে ও ফারজানার মুক্তির দাবিতে শনিবার সকাল ৯টায় তার বাড়ির সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন গ্রামের নারীরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলার কারণে কমলাবাড়ি গ্রাম ও তার পাশের এলাকার মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এতে ওই এলাকা এখন পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

কমলাবাড়ি গ্রামের গৃহবধূ মাহমুদা খাতুন বলেন, “আড়াই হাজার মানুষকে আসামি করে মামলার কারণে কমলাবাড়ি গ্রামসহ আশপাশের গ্রাম এখন পুরুষশূন্য। এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতার মাঝে ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে থাকতে হচ্ছে। নির্বাচনী ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টার কারণে সহিংসতার এ ঘটনা ঘটেছে।”

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ফারজানা পারভীনের মুক্তি দাবি করেন তিনি।

একই গ্রামের মমতাজ হোসেন বলেন, “ফারজানা পারভীনের বাড়িতে প্রতিপক্ষরা আগুন দিয়েছে। পুলিশের মামলার কারণে গ্রামের সব পুরুষকে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। ফলে নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।”

তবে আগুন দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ ও সরকারি কাজে বাধাদানের জন্য যে মামলা হয়েছে সেই মামলা থেকে বাঁচার জন্য ফারজানার লোকজন অপকৌশল হিসেবে ওই বাড়িতে আগুন দিয়ে নিজেদের বাঁচার পথ খুঁজছেন। সেই সঙ্গে আমাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার মামলা দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।”