গাবতলী থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, বালিয়াদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল মজিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার অজ্ঞাতনামা তিন শতাধিক ব্যক্তির নামে থানায় মামলা করেছেন।
বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনা তদন্তে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
পঞ্চম দফা ইউপি নির্বাচনে বুধবার বালিয়াদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষে গণনার আগে গ্রামবাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিননীর সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে চার জন মারা যান।
থমথমে কালাইহাটা গ্রামের পরিবেশ
গুলিতে গ্রামের মানুষ নিহতের ঘটনায় গাবতলীর কালাইহাটা গ্রামের মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার গ্রামে সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রামের আঙ্গিনায় মহিলাদের জটলা, কালার হাটা বাজারে আলোচনা এবং মামলার আতংক। গোটা গ্রামের আঙ্গিনা, বাজার, রাস্হার মোড়ে একই গল্প ওইদিন ঘটে যাওয়া ঘটনার।
ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জানালার কাচ ভাঙা, এখানে ওখানে ইট ছড়িয়ে আছে। কোনো শিক্ষার্থী ভয়ে বিদ্যালয়ে আসেনি। গুলিবিদ্ধ হয়ে যেখানে নিহতরা পড়ে ছিল সেখানে ছোপ ছোপ কালচে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। জায়গাগুলো ইট দিয়ে ঘেড়াও করে লাল পতাকা উড়ানো হয়েছে।
থেমে থেমে মিছিল চলছিল। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখলেই এগিয়ে এসে শ্লোগান দিচ্ছিল - "আমার ভাই-বোন মরল কেন প্রশাসন জবাব চাই।” “হুকুম দাতা ম্যাজিস্ট্রেটের বিচার চাই করতে হবে।"
নিহত কুলসুমের স্বামী খোকন মিয়া বলেন, “কী অপরাধ ছিল আমার স্ত্রীর। ভোট কেন্দ্রের বাইরে বসেছিল ফলাফল জানতে। তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
নিহত খোরশেদ আকন্দের ছেলে এরশাদ বলেন, “৭০ বছর বয়সী আমার বাবা কী হামলা করার ক্ষমতা রাখে? উৎসবমুখর ভোটের ফলাফল দেখার জন্য দূরে বসেছিল। তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো। আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।”
তিনি আশঙ্কা করছেন, পুলিশ উল্টো মামলায় গ্রামবাসীকে হয়রানি করে কিনা।
বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান ইউনুস আলী রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গুলিতে নিহতদের লাশ দাফন হচ্ছে। নিহতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং গ্রামবাসী যেন অন্যায় মামলায় না পড়ে এ বিষয়ে প্রসাশনের প্রতি আহ্বান থাকবে।”
গুলি করার আদেশের বিষয়ে শাহজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিব আহম্মেদ বলেন, “ঘটনার শুরু এবং শেষের প্রমাণ আছে। আমি জনগণকে শান্ত হতে বক্তব্য দিয়েছি – তা রেকর্ড করা আছে। কী ঘটেছে তারও প্রমাণ আছে। সেখানে আমি সরকারি কর্তব্য পালন করেছি।”