কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার শিক্ষকদের

চল্লিশ শিক্ষার্থীর সাজা হওয়ার একদিন পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে নেওয়া ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষকরা।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2022, 04:06 PM
Updated : 6 Jan 2022, 04:42 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভায় আগামী ৯ জানুয়ারি তাদের ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস।

এর আগে সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সভায় কুয়েটের ১১৪ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। সভায় ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

“সমিতির পক্ষ থেকে শিক্ষকদের এক দিনের বেতন ও সমিতির ফান্ড থেকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে অধ্যাপক সেলিমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

সভায় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৪৪ ছাত্রের শাস্তি যাতে বহাল থাকে সে পদক্ষেপ গ্রহণে কুয়েট কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকার আহবান জানানো হয়, বলেন তিনি।  

প্রতীক বিশ্বাস বলেন, অধ্যাপক সেলিমের পাওনা টাকা দ্রুত পরিশোধ এবং তার পরিবারকে অতিরিক্ত এক কোটি টাকা প্রদান, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী কুয়েটে তাকে স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা এবং মৃত্যুর ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয় সভা থেকে।

গত ৩০ নভেম্বর কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী দেখা করে আসার পর ক্যাম্পাসের কাছে ভাড়া বাসায় ফিরে মারা যান কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সেলিম হোসেন (৩৮)।

অভিযোগ ওঠে, সেজানসহ তারা অধ্যাপক সেলিমকে লাঞ্ছিত করেছেন, যা তাকে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং অধ্যাপক সেলিমের পরিবার এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করলেও সেজান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ১ ডিসেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন শুরু করেছিল শিক্ষক সমিতি।

উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট বন্ধ ঘোষণা এবং ঘটনা তদন্তে দুই দফায় কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

৪ ডিসেম্বর সেজানসহ নয় শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

ছুটি দুই দফা বাড়ানোর পর ৭ জানুয়ারি হল খোলা এবং ৯ জানুয়ারি ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেয় প্রশাসন।

বুধবার সেজানসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার এবং ৪০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন শাস্তি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি।

ওই শিক্ষার্থীরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।