কুমিল্লায় নতুন ভাস্কর্য ‘যুদ্ধাহত বীর’

সাত বীরশ্রেষ্ঠসহ মুক্তিযুদ্ধে সব শহিদ ও সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের স্মরণে কুমিল্লা নগরীতে নির্মিত হয়েছে ভাস্কর্য ‘যুদ্ধাহত বীর’।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2021, 02:57 PM
Updated : 31 Dec 2021, 02:57 PM

শুক্রবার দুপুরে নগরীর ধর্মসাগর পাড়ের নগর উদ্যানে নির্মিত এ ভাস্কর্যটি উদ্ধোধন করেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।

এ সময় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

ভাস্কর্যটির শিল্পী মোহাম্মদ শাহীন বলেন, “দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনেক ভাস্কর্য রয়েছে। তবে ‘যুদ্ধাহত বীর’ বাংলাদেশে এটিই প্রথম।”

ভাস্কর্যের কাজ করতে পেরে অনেক আনন্দিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে উদ্বুদ্ধ হবে।

ভাস্কর্যটির বিষয়ে তিনি বলেন, “ক্রাচে ভর দিয়ে বিজয় উল্লাস করছেন একজন যুদ্ধাহত বীর। তার বাঁ পা থাকলেও ডান পা নেই। যুদ্ধাহত এ সূর্যসন্তানের মুখে বিজয়ের হাসি। ডান হাতে একটি রাইফেল উঁচু করে আছেন তিনি। রাইফেলের উপরের অংশে রয়েছে জাতীয় পতাকা।”

ভাস্কর্যের পেছনের ফলকের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভাস্কর্যের পেছনের ফলকের নিচের অংশে রয়েছে একটি কচি পাতা, যা সদ্য স্বাধীনতা লাভ করা বাংলাদেশকে ইঙ্গিত করে। এছাড়া বাংলাদেশের মানচিত্রের দুই পাশে তামা, পিতল ও অ্যালুমিনিয়ামের তিনটি বর্ণালি রেখা রয়েছে। এর মাধ্যমে সোনা-রুপার বাংলাদেশকে বুঝানো হয়েছে।

“মানচিত্রের উপরে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ দিয়ে আজকের সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশের বার্তা দেওয়া হয়েছে। এতে ১৬টি এসএস স্টিক দেওয়া হয়েছে, যা ১৬ ডিসেম্বরের বার্তা বহন করে। নিচের অংশে টেরাকোটার ছোঁয়া রয়েছে।”

শিল্পী শাহীন বলেন, “ফলকে যুদ্ধাহত বীরের ডানে ৩০, বামে ২ এবং উপরে ৭ লেখা রয়েছে। এ তিনটি সংখ্যা দ্বারা ৭ বীরশ্রেষ্ঠ, ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর কথাকে স্মরণ করা হয়েছে।”

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কমিল্লা সিটি মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, “নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন কাজের একটি অংশ এটি।

“যাদের ত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ পেয়েছি সেসব বীরদের স্মরণে ভাস্কর্যটি করা হয়েছে। আমরা চাই তরুণরা স্বাধীনতার ইতিহাস জানুক।”

সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। ধর্মসাগর পাড়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে। তারা যুদ্ধাহত বীর দেখবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত হবে।”