মাদারীপুরে রোপা আমনের ‘ফলন ভালো, দামও ভালো’

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং রোগবালাই না হওয়ায় মাদারীপুরে এবার রোপা আমনের ফলন ভালো হয়েছে; দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে বলে কৃষকসহ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2021, 06:29 AM
Updated : 29 Dec 2021, 09:28 AM

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তরা ঠিকমত তদারক করায় এই সুফল এসেছে। তাছাড়া এবার আমন ধানে ‘তেমন কোনো রোগ বালাই হয়নি’ এ জেলায়।

সরজমিনে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিভিন্ন এলাকায় ধানের বাজারও জমে উঠেছে।

সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের আনার উদ্দিন মৃধা বলেন, তিনি এবার পাট কাটার পর পাঁচ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল রোপা আমনের চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় তার ৩০ থেকে ৩৫ মণ ধান হয়েছে।

“গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই আমাদের এত ভালো ফলন হয়েছে। আবার দামও ভালো আছে।”

দক্ষিণ বিরাঙ্গল গ্রামের আনন্দ বৈদ্য এ বছর দুই বিঘা জমিতে চিনিগুঁড়া জাতের ধান চাষ করেছেন বলে জানান। তিনিও খুশি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ফলন খুব ভালো হয়েছে। চিনিগুঁড়া ওজনে কিছুটা কম হলেও দামের দিক দিয়ে পুষিয়ে যায়।”

অনেকে জমি লিজ নিয়ে ধান করেছেন বলে তারা জানান।

জেলার ডাসার উপজেলার রতন চন্দ্র উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, তিনি এ বছর তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে আমন ধানের চাষ করেছেন।

“এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ৯০০ টাকার ওপরে ধানের দাম পাওয়া যাচ্ছে।”

আমন ধান কেবল ঘরে উঠছে। বাজারে নতুন ধানের দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করছে। ডাসার উপজেলার শশিকর হাটের ধান ব্যবসায়ী হৃদয় সরকার ফুরফুরে কণ্ঠে বলেন, মোটা ধানের দাম ৯০০ আর চিকন ধানের দাম ৯৩০ টাকায় উঠেছে এবার। নতুন ধান হাটে আগামী সপ্তাহ থেকে বেশি পাওয়া যাবে।

তবে পুরনো ধান কোথাও কোথাও ৯৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

জেলার কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, এই অঞ্চলে চলতি বছর ব্র্রি-৩৩, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৭৫, ৮৭ ও বিনা ধান-৭ জাতের রোপা আমন চাষ করায় কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়েছেন। তাছাড়া চলতি বছর রোপা আমন চাষ করার জন্য কৃষকদের সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ধরনের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

সারা বছরই কৃষকদের বিভিন্ন প্রক্ষিণ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এসএম সালাউদ্দিন।

তিনি বলেন, এবার এ জেলায় প্রতি হেক্টরে সাড়ে তিন টন চাল হিসেবে ৬০ হাজার ৮৮০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।