মনির হোসেন নামে এই স্বজন ঝালকাঠি থানায় মামলাটি দায়ের করেন বলে থানার পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান।
নৌযান আইনে দায়ের করা মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, গাফিলতির মাধ্যমে তার স্বজনসহ অন্য যাত্রীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আরজিতে তিনি এর বিচার চেয়েছেন।
লঞ্চটির নানা অনিয়মের কথা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যেই উদঘাটন করেছে। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। লঞ্চের ইঞ্জিন পরিবর্তনের কথা সরকারি দপ্তরে জানানো হয়নি। চারজন মাসটার-ড্রাইভারের মধ্যে তিনজনেরই অনুমতি ছিল না।
এর আগে এ ঘটনায় আরও তিনটি মামলা হয়। শনিবার বরগুনা থানায় বরগুনা সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। বরগুনার আদালতে হয়েছে আরেকটি মামলা; যার বাদী বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম নাসি। তাছাড়া সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর থেকে ঢাকার নৌ আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
মামলার পর পুলিশ লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখকে গ্রেপ্তার করেছে।
পরিদর্শক সোহাগ বলেন, অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ ইতোমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে।
শুক্রবার ভোরের দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটিতে যখন আগুন লাগে, শীতের রাতে অধিকাংশ যাত্রী ঘুমাচ্ছিলেন। দুই তলার বন্ধ কেবিনে যারা ঘুমাচ্ছিলেন, তাদের অনেকের বের হওয়ারও সুযোগ হয়নি। সেই আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা।
লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাট থেকে চারশর মত যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় বলে বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে। তবে যাত্রীরা বলছেন, লঞ্চে আটশর বেশি যাত্রী ছিল।
আগুন লাগলে বহু যাত্রী পানিতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। অনেকে সাঁতার না জেনেও সেদিন পানিতে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে খবর এসেছে গণমাধ্যমে। তাদের কতজন সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন তার পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তাছাড়া দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে আছেন অর্ধশতাধিক।
পুলিশ এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক সোহাগ।