মাগুরার গৃহকর্মীকে ‘নির্যাতন’, গৃহকর্ত্রী আটক

মাগুরার এক শিশু গৃহকর্মীকে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি ঠিকমত খেতে না দেওয়ার অভিযোগে গৃহকর্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2021, 01:22 PM
Updated : 24 Dec 2021, 01:22 PM

‘দীর্ঘদিনের অপুষ্টিতে শিশুটি কঙ্কালসার হয়ে গেছে’ এবং তার শরীরে ‘একাধিক নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে’ বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

শিশুটিকে বৃহস্পতিবার বিকালে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসক রফিকুল আহসান বলেন, “ভর্তি করার সময় শিশুটির শরীরে একাধিক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। কিছু চিহ্ন গরম কিছুর ছ্যাঁকাজাতীয়। দীর্ঘদিনের অপুষ্টিতে তার শরীর কঙ্কালসার হয়ে গেছে।”

তাকে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

১১ বছর বয়সী শিশুটির বাড়ি সদর উপজেলার বাহারবাগ এলাকায়।

তার দাদি মনোয়ারা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে দাদা-দাদির কাছে ছিল শিশুটি।

“স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় যাচ্ছিল সে। বছর দেড়েক আগে গ্রামের প্রতিবেশী মাসুদুর রহমান বাবু ও তার স্ত্রী লিপি খাতুন তাদের ঢাকার মিরপুরের বাসায় নাতনিকে নিয়ে যান। বাবু ঢাকায় ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে শুনেছি। তারা মাসে এক হাজার টাকা বেতন ও সঙ্গে থাকা-খাওয়া দিতে চেয়েছিলেন।”

মাগুরা শহরের কলেজপাড়ায়ও বাবুর পারিবারিক বাড়ি রয়েছে।

বুধবার বাবু সপিরবার তাদের মাগুরার বাসায় আসেন পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে।

শিশুর দাদি বলেন, “খবর পেয়ে নাতনিকে দেখতে যাই মাগুরার ওই বাসায়। গিয়ে দেখি নাতনি কঙ্কালসার হয়ে গেছে। আর তার সারা গায় নির্যাতনের চিহ্ন।”

তিনি নাতনির বরাতে বলেন, “বাবুর স্ত্রী লিপি খাতুন হেন কোনো নির্যাতন নেই যা করেনি। ধারালো সুচ দিয়ে, গরম খুন্তি দিয়ে, পেন্সিল দিয়ে, কলমের খোঁচা দিয়ে নির্যাতন করেছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে চড়, লাথি, বেত দিয়ে মেরেছে। এ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তাকে তিন বেলা খাবার পর্যন্ত দেয়নি। যা দিত তা বাসি ও পচা।”

পরে তারা নাতনিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। আর শিশুর দাদা থানায় মামলা করেন।

পুলিশ বাবুর স্ত্রীকে আটক করলেও বাবুকে এখনও ধরেনি।

মাগুরা থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, “মামলার পরপরই তারা লিপি খাতুনকে আটক করেছেন। কিন্তু বাবু পলাতক রয়েছেন। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।”

নির্যাতন বিষয়ে বাবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।