তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখর রাঙামাটি

বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে তিন দিনের টানা অবকাশে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2021, 01:30 PM
Updated : 18 Dec 2021, 05:20 AM

বৃহস্পতিবার থেকেই দৃশ্যমান এই পর্যটকমুখরতা শুক্রবার যেন সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায়।

মহামারীতে দীর্ঘ মন্দার পর ব্যাপক পর্যটক সমাগমে হোটেল-মোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়ীরাও ভাল ব্যবসা করছেন বলে তারা জানিয়েছেন।

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, “পুরো শহরে এখন অসংখ্য পর্যটক। আমাদের মোটেল-কটেজ কোথাও সিট খালি নেই।”

শুক্রবার হাজার হাজার মানুষ ঝুলন্ত সেতু এলাকায় প্রবেশ করেছেন বলে জানান তিনি।

রাঙামাটির অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে ওঠা পুলিশের পলওয়েল পার্ক ও লাভপয়েন্টে দায়িত্বে থাকা এসআই মিজানুর রহমান বলেন, “আনুমানিক পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ শুক্রবার পলওয়েলে এসেছেন, যাদের অর্ধেকেরও বেশি বেড়াতে আসা পর্যটক।

“এ মাসে আমাদের সাতটি কটেজের একটিতেও সিট খালি নেই।”

রাঙামাটির হোটেল স্কয়ার পার্কের স্বত্বাধিকারী নেয়াজ আহমেদ বলেন, “মনে হচ্ছে, গত দুই বছরের দুঃসময় কাটিয়ে পাহাড়ের পর্যটন ফের আলোর মুখ দেখছে। মৌসুমের শুরুতেই মানুষের এই বিপুল উপস্থিতি আশা জাগাচ্ছে।”

রাঙামাটি শহর থেকে দূরের পর্যটন স্পট সাজেক। পাহাড়শীর্ষে অবস্থিত এই মেঘমিতালীর টুকরো ভূখণ্ডটিও পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে বলে জানালেন সেখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

সাজেকের নীলপাহাড় রিসোর্টের মালিক আলফ্রেড লুসাই বলেন, “এখানে যত পর্যটক এসেছেন, তারচেয়ে বেশি ফিরে গেছেন থাকার সুযোগ না পেয়ে। এখানকার দেড় শতাধিক হোটেল-মোটেল ও কটেজের কোথাও সিট খালি নেই।”

কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক ইশরাত জাহান বলেন, “পাহাড় সব সময়ই আমাকে টানে। তাই পরিবারের সবাই সমুদ্রে যেতে চাইলেও আমার ইচ্ছাতেই রাঙামাটি এসেছি। হ্রদ আর পাহাড়ের সমন্বয়ে এক অদ্ভুত শহর রাঙামাটি। খুব ভাল লাগে এবং ভীষণ টানে এই শহর।”

ঢাকা থেকে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা আসাদ রহমান বলেন, “যদি এই শহরকে একটু পরিকল্পিতভাবে সাজানো যায় এবং পর্যটকবান্ধব সুবিধাগুলো নিশ্চিত করা যায়, তাহলে এটিই হবে দেশের পর্যটনের অন্যতম প্রধান গন্তব্য।

শহরভর্তি পর্যটকের নিরাপত্তায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ বলেন, পর্যটকরা যেন নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারেন এবং কোনোভাবেই যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শহরের পর্যটনকে খুব নিবিড়ভাবে দেখেন এমন এক সংবাদকর্মী সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার হেফাজত সবুজ।

তিনি বলেন, কোভিডের ভয়কে জয় করে বিপুল পরিমাণ পর্যটক এখানে ভিড় করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়েনি। আসলে ঘরবন্দি মানুষ স্বস্তি খুঁজছেন মুক্ত বাতাসে।