বিবস্ত্র করে নির্যাতন: পর্নগ্রাফির মামলা পিবিআই থেকে সিআইডিতে

নোয়খালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় পর্নগ্রাফি আইনের মামলার তদন্ত ভার পিবিআই থেকে সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে। 

নোয়াখালী প্রতিনিধিআবু নাছের মঞ্জু, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2021, 04:42 PM
Updated : 14 Dec 2021, 05:32 PM

বাদীর আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রাছুল মামুন জানান, পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রে বাদী নারাজি দেওয়ার পর আদালত তদন্ত ভার পরিবর্তনের এই আদেশ দেয়।  

একই ঘটনায় দায়ের করা নির্যাতনের পৃথক একটি মামলার রায়ে মঙ্গলবার ১৩ আসামির দশ বছর সশ্র কারাদণ্ড দিয়েছে নোয়াখালীর একটি আদালত।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে একদল লোক এক গৃহবধূর ঘরে ঢুকে স্বামীসহ ওই নারীকে পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে তারা ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। এই ঘটনার ৩২ দিন পর গত বছরের ৪ অক্টোবর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তারা।  

এই ঘটনায় ওইদিনই ওই নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং নির্যাতনের ভিডিও ধারণের ঘটনায় পর্নগ্রাফি আইনে পৃথক দুইটি মামলা করেন।

এর মধ্যে নির্যাতনের মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২৭ জনকে আসামি করা হয়।

এরপর বাদী ধর্ষণের আরেকটি মামলা করেন। ওই ঘটনা বিবস্ত্র করার ঘটনার এক বছর আগে ঘটে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এই মামলায় দেলোয়ার হোসেন দেলু ও তার সহযোগী আবুল কালামকে আসামি করা হয়।

ইতিমধ্যে এই ধর্ষণ মামলার রায়ে গত ৪ অক্টোবর দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী আবুল কালামকে যাব্বজীবন করাদণ্ড দেয় নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১।

বিবস্ত্র করে নির্যাতন মামলার রায় হয় মঙ্গলবার [১৪ ডিসেম্বর], যেখানে দেলোয়ার হোসেনসহ ১৩ আসামির দশ বছর কারাদণ্ড হয়।  

পর্নগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জেলা কার্যালয়ে পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ১৩ জুন এ মামলায় ৪ আসামি ইস্রাফিল হোসেন মিয়া, সামছুদ্দিন সুমন, নূর হোসেন রাসেল ও জামল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামালের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তারা।

“এর মধ্যে ইস্রাফিল হোসেন মিয়া ও সামছুদ্দিন সুমন এজাহারভুক্ত আসামি এবং নূর হোসেন রাসেল ও জামল উদ্দিনকে তদন্তকালে যুক্ত করা হয়।”

এ ব্যাপারে বাদীর আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রাছুল মামুন বলেন, পিবিআই কর্মকর্তার দেওয়া অভিযোগপত্রে বাদী অসন্তোষ প্রকাশ করে গত ৪ নভেম্বর আদালতে নারাজি দেন। এ বিষয়ে গত ৭ ডিসেম্বর শুনানি শেষে বিচারক বাদীর নারাজি গ্রহণ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দেন।

অ্যাডভোকেট হাবিবুর রাছুল মামুন বলেন, আসামিদের সবার অপরাধের ধরন একই রকম হলেও তদন্ত কর্মকর্তা ভিন্ন ভিন্ন ধারায় তাদের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করায় আসামিরা বিচার প্রক্রিয়ায় সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

আরও পড়ুন: