চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় শুনতে মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেই নারী, মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং আসামিদের স্বজনরাও আদালতে উপস্থিত হয়েছেন।
জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন বেলা ১১টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ লাভলু।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ১৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে মামলার থেকে অব্যাহতি দিয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত।
তাদের মধ্যে নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুমন কনট্রাকটর, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলু গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
বাকি চার আসামি আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান তারেককে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। মামলার বিচারে বাদীসহ ৪০ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত।
এ মামলায় প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজার পাশাপাশি অর্থদণ্ড হবে বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলেছে, আসামিরা এ মামলায় অভিযোগ থেকে খালাস পাবে বলে তারা আশা করছেন।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে স্থানীয় সন্ত্রাসী দল দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা মধ্যবয়সী এক নারীকে ঘরে ঢুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে।
এ সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও ঘটনার একমাস পর ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে থাকা ওই নারীকে ওইদিনই উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
এরপর বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্ণগ্রাফি আইনে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় দুটি মামলা করেন ওই নারী।
পরে তিনি একই থানায় আরেকটি মামলা করেন, যেখানে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর এবং ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল দুই দফায় তাকে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয় স্থানীয় সন্ত্রাসী দল দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে।
গত ৪ অক্টোবর ওই ধর্ষণ মামলায় রায়ে দেলোয়ার ও কালামকে যাব্বজীবন করাদণ্ড দেয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।