মাদারীপুরে আমনের ‘ফলন ভাল,’ কৃষকের মুখে হাসি

মাদারীপুরে রোপা আমনের ভাল ফলন হয়েছে জানিয়ে জেলার কৃষকরা বলেছেন, বাজারে ধানের দাম তুলনামূলক ভাল থাকায় খুশি তারা।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2021, 11:09 AM
Updated : 8 Dec 2021, 11:09 AM

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও বলছে, অনুকূল আবহাওয়া ও রোগ-বালাই না হওয়ায় আমনের ফলন এবার ভাল হয়েছে। তাছাড়া বাজারে ধানের দাম ভাল থাকায় এ বছর লাভবান হবেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এস এম সালাউদ্দিন বলেন, এ বছর প্রতি হেক্টরে সাড়ে তিন টন চাল হিসেবে মাদারীপুরে ১৭ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে ৬১ হাজার ৮৮০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

ফলন ভাল হওয়ার বিশেষ কারণ আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা তদারক করায় এবার আমন ধানে তেমন কোনো রোগবালাই হয়নি। তাই ফলন ভাল হয়েছে।

ধানের দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন নয়শ টাকা থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। এতে জেলার আমন চাষিরা লাভবানই হবেন।

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় এবার রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৩১ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে।

কৃষকদের এ বছর সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন বীজ ও সার দেওয়ার কারণেও ফলন ভাল হয়েছে বলে মনে করেন কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস।

তিনি বলেন, কৃষকরা এ বছর ব্র্রি-৩৩, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৭৫, ৮৭ ও উন্নত জাতের বিনা-৭ চাষ করায় কাঙ্ক্ষিত ফলন ঘরে তুলতে পারছেন।

সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের আনার উদ্দিন মৃধা পাঁচ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল রোপা আমনের চাষ করেছেন।

তিনি বলেন, চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই আমনের এত ভাল ফলন হয়েছে।

“কয়েক বছর দাম কম থাকায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। চলতি বছর এখনও ধানের দাম ভাল আছে।”

দক্ষিণ বিরাঙ্গল গ্রামের চাষী আনন্দ বৈদ্য চলতি বছর দুই বিঘা জমিতে চিনিগুঁড়া ধান চাষ করেছেন বলে জানান।

তিনি বলেন, “এ বছরই প্রথম চিনিগুঁড়া চাষ করেছি। খুব ভাল ফলন হয়েছে। এই ধান ওজনে কিছুটা কম হলেও দামের দিক দিয়ে পুষিয়ে যায়।”

হাটে এখন মোটা ধান প্রতিমণ গড়ে নয়শ টাকা আর চিকন গড়ে সাড়ে নয়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ডাসার উপজেলার শশিকর হাটের ধান ব্যবসায়ী হৃদয় সরকার।

তিনি বলেন, “কৃষকেরা এখন আমন ধান ঘরে তুলছেন। নতুন ধানের দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করে। আজ মোটা ধান প্রতি মণ গড়ে ৯০০ টাকা এবং চিকন ধান গড়ে সাড়ে নয়শ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।”

আগামী সপ্তাহ থেকে হাটে নতুন ধান বেশি পাওয়া যাবে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

কালকিনি উপজেলার কালিগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী অমলেন্দু মণ্ডল বলেন, “নতুন ধান কেবল উঠেছে। এখনও হাটে পুরোপুরি আসা শুরু করেনি। দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে উঠতে শুরু করবে।”