মঙ্গলবার জেলা সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ও অম্বিকাপুর ইউনিয়ন এবং নগরকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে- মুড়িকাটা, পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও সরিষার ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।
চাষিরা বলছেন, চলতি মৌসুমে পাঁচ হাজারের বেশি জমিতে ফরিদপুরে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) আবাদ হয়েছে। চাষিদের এখন ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তোলার কথা থাকলেও ক্ষেতে পানি উঠে পড়ায় তাদের মাথায় হাত পড়েছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. হযরত আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় জোয়াদের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে জেলার ২০ হাজার হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে তুলনামূলক ব্যায় বেশি; হঠাৎ এই বৃষ্টিপাতে তাদের (চাষিদের) আর্থিক ক্ষতি হবে অনেক।
কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের খলিল মণ্ডলের মাঠে কথা হয় চাষি সুরত খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, “এক বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করতে খরচ ৪০ হাজার টাকার বেশি। জেলার অধিকাংশ ক্ষেত থেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজ তোলার কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু এখন বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড় জোয়াদের প্রভাব। পানি জমে থাকায় চাষিরা ক্ষেতে নামতে পারছে না “
জেলার নগরকান্দা উপজেলায় পেঁয়াজ উৎপাদনে অন্যতম। এই উপজেলার আশফরদী গ্রামের পেঁয়াজ চাষি রোকন উদ্দীন মাতুব্বর বলেন, “আমি প্রতি বছর ১২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করি। তাই এ বছর সেই জমিতে পেঁয়াজের চাষ করতে ১৪ কেজি দানা কিনে বীজতলা তৈরি করেছিলাম। বৃষ্টিতে সব শেষ হয়েছে। এখন আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না “
একই উপজেলার ছোট পাইককান্দী গ্রামের আরেক চাষি সাহেদ আলী বলেন, “আমাদেরতো সব শেষ। এখন সরকার যদি আমাদের পাশে থেকে সাহায্য সহযোগিতা না করে তাহলে এত টাকা খরচ করে আবার বীজতলা তৈরি করে পেঁয়াজের আবাদ করা সম্ভব না।”
এ বিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন ইয়ামিন বলেন, “ঘূর্ণিঝড় জোয়াদের প্রভাবে নগরকান্দা উপজেলায় পেঁয়াজের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরপণ করতে আমাদের উপ-সহকারীরা মাঠে আছেন। আমরা চাষিদের সঙ্গে কথা বলছি, তাদের খোজ খবর নিচ্ছি।”
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ইতোমধ্যে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন, কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে খোঁজ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চুড়ান্ত ক্ষতির পরিমাণ জানার পর চাষিদের সহযোগিতা করা হবে।