বৃষ্টির কারণে মাঠের ফসল নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান।
অসময়ের এ বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি, গম ও রবি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে জেলা কৃষি দপ্তরও।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, রবিশস্য ও গম চাষের জন্য এ সময়ের বৃষ্টিপাত মোটেও ভাল না। বরং বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। রবি ফসলের পাশাপাশি গম ও সদ্য রোপণকৃত কিছু সবজি নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে এসব সবজির উৎপাদন বিলম্বিত হতে পারে।
এই মুহূর্তে কী পরিমাণ জমির রবিশস্য ও গমের ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন মাঠে রবি ফসল ও গমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে নানা জাতের সরিষা ও মসুর ডাল। আর ৪৪০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে গম।
এসব জমিতে সবে সরিষা, মসুর ও গমের বীজ বোনা হয়েছে। এরই মধ্যে টানা বৃষ্টি কৃষকের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে। অধিকাংশ জমির চারা বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এছাড়া হঠাৎ বৃষ্টিতে ক্ষেতে কেটে রাখা আমন ধান তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এতে ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
অপরদিকে মুন্সীগঞ্জ জেলায় প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশীদ আলম জানান।
তিনি বলেন, গেল মৌসুমে জেলায় প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হয়েছে। এবার তার চেয়ে বেশি ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু আলুর জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
খুরশীদ আলম বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত আরও অনেক জমিতে আলু রোপণের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টিতে তা এখন আর হচ্ছে না।
ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সদর উপজেলার সাতানিখিল গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “ধার-দেনা করে জমিতে আলু রোপণ করেছি। এখনও চারা ওঠেনি। তার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। বৃষ্টির কারণে মাটির নিচে থাকা বীজ পচে যেতে পারে।
নুরুল ইসলাম ছৈয়াল নামে আরেক কৃষকও একই আশঙ্কার কথা জানান।
জেলার শ্রীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সান্ত্বনা রানী বলেন, উপজেলায় প্রায় ছয়শ হেক্টর জমিতে আলুর বীজ রোপণ করা হয়েছিল। আলুর চারা এখনও গজায়নি। টানা বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বৃষ্টির কারণে আলু চাষিরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষতির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠান হবে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিস মাঠে কাজ করছে।